বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। রক্তে শর্করার মাত্রা সারাদিন ধরে ওঠানামা করলেও, ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এই তারতম্য আরও বেশি মারাত্মক হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ যেমন বিপজ্জনক, তেমনই নিম্ন রক্তচাপও প্রাণঘাতী হতে পারে। রক্তে শর্করার ভারসাম্য রক্ষা করা তাই ডায়াবেটিস সংক্রান্ত জটিলতা এড়াতে অত্যন্ত জরুরি।
তবে, এই অবস্থা প্রাণঘাতী হলেও, কিছু সাধারণ জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং সহজ ঘরোয়া প্রতিকার অনুসরণ করে এই সমস্যাকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। আসুন জেনে নেওয়া যাক, এমন ৬টি খাবার সম্পর্কে যা প্রাকৃতিকভাবেই রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
১. মেথি দানা: ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আয়ুর্বেদিক সমাধান
মেথি দানা আপনার রক্তে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করতে পারে। আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত মেথির দানা খাওয়া উচিত। এর জন্য সকালে খালি পেটে মেথি ভেজানো জল পান করা অত্যন্ত উপকারী।
২. করলা: হাইপোগ্লাইসেমিক উপাদানে ভরপুর
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য করলা একটি অসাধারণ উপকারী খাবার। এর হাইপোগ্লাইসেমিক জৈব-রাসায়নিক পদার্থ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকর। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় করলা অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
৩. আমলকী: কার্বোহাইড্রেট শোষণ ও ইনসুলিন সংবেদনশীলতায় সহায়ক
আমলকী কার্বোহাইড্রেট শোষণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এছাড়াও, এতে থাকা ক্রোমিয়াম ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে সহায়ক। রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে এটিকে কাঁচা বা রস করে নিয়মিত খাওয়া যেতে পারে।
৪. বিভিন্ন মসলা: রান্নাঘরের প্রাকৃতিক ইনসুলিন
কিছু মসলাতেও ডায়াবেটিস প্রতিরোধক গুণ রয়েছে। হলুদ, সরিষা, দারুচিনি এবং ধনেপাতা – এই ধরনের মসলা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এগুলি নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখলে উপকার পাওয়া যায়।
৫. ছোলা ডাল: ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আদর্শ প্রোটিন উৎস
ছোলা ডাল ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি চমৎকার খাবার। এটি শুধু যাদের ডায়াবেটিস নেই, তাদের রোগ হওয়ার ঝুঁকিই কমায় না, বরং দীর্ঘস্থায়ী ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্যও এটি সমান উপকারী হিসেবে কাজ করে। ছোলার উচ্চ ফাইবার ও প্রোটিন রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।
এই খাবারগুলি আপনার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে প্রাকৃতিকভাবেই রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে পারবেন। তবে, যেকোনো খাদ্যতালিকাগত পরিবর্তনের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অপরিহার্য।