রং দিয়ে যায় চেনা…হিরের এক এক রংয়ের নেপথ্যে কোন রহস্য লুকিয়ে আছে জেনেনিন

হীরা বলতেই আমাদের মনে আসে কাঁচের মতো স্বচ্ছ এক ঝলমলে রত্ন। কিন্তু প্রকৃতিতে হীরা শুধু স্বচ্ছই নয়, নীল, হলুদ, সবুজ, এমনকি গোলাপি ও লাল রঙেরও হয়ে থাকে। হীরার এই বর্ণিল রূপের পেছনে লুকিয়ে আছে এক মজার বিজ্ঞান। বিভিন্ন রঙের হীরার দামও হয় ভিন্ন, আর তাদের মধ্যে লাল হীরাই সবচেয়ে মহার্ঘ ও বিরল।

কীভাবে সৃষ্টি হয় হীরা?
হীরা মূলত বিশুদ্ধ কার্বন দিয়ে তৈরি। ভূগর্ভের ১৬১ কিলোমিটার গভীরে উচ্চ তাপমাত্রা এবং উচ্চ চাপে কার্বনের পরমাণুগুলো পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে হীরার স্ফটিক তৈরি করে। এরপর লাভা বা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের মাধ্যমে হীরা দ্রুত ভূপৃষ্ঠের দিকে উঠে আসে। বেশিদিন ভূগর্ভে থাকলে হীরা গলে যেতে পারে বা গ্রাফাইটে রূপান্তরিত হতে পারে।

রঙের বৈজ্ঞানিক কারণ:
সাধারণত, বিশুদ্ধ কার্বন থেকে তৈরি হীরা স্বচ্ছ হয়। কিন্তু হীরার স্ফটিকে যদি কার্বন ছাড়া অন্য কোনো রাসায়নিক উপাদান মিশে যায়, তবে তা রঙিন হীরার জন্ম দেয়।

হলুদ বা কমলা হীরা: হীরার স্ফটিকে যদি নাইট্রোজেন প্রবেশ করে, তবে তা হলুদ বা কমলা রঙ ধারণ করে।

নীল হীরা: কার্বনের সঙ্গে বোরোন মিশলে হীরা নীল রঙ ধারণ করে।

সবুজ হীরা: এটি তেজস্ক্রিয় বিকিরণের ফল। যখন হীরা ইউরেনিয়াম বা থোরিয়ামের মতো তেজস্ক্রিয় উপাদানে সমৃদ্ধ কোনো পাথরের পাশে থাকে, তখন সেই বিকিরণের প্রভাবে এটি সবুজ রঙে ঝলমল করে।

গোলাপি বা লাল হীরা: এই রংগুলো আসে হীরার গঠনে ত্রুটির কারণে। ভূগর্ভের প্রচণ্ড তাপ ও চাপের কারণে হীরার কার্বনের জালিকা বেঁকে গেলে বা পাকিয়ে গেলে লাল বা গোলাপি রঙের হীরা তৈরি হয়।

সবচেয়ে দামি ও বিরল হীরা:
অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন ইউনিভার্সিটির গবেষক লিউক ডসেট জানান, ভূগর্ভে অতিরিক্ত চাপ পড়লে হীরার রঙ বাদামিও হতে পারে। তবে বাজারে নীল এবং গোলাপি হীরার দাম স্বচ্ছ হীরার চেয়ে বেশি। সব ধরনের হীরার মধ্যে লাল হীরা সবচেয়ে বিরল এবং এর দামও সবচেয়ে বেশি। এটি প্রকৃতিতে খুবই কম পাওয়া যায়, যা একে আরও মূল্যবান করে তুলেছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy