সম্প্রতি হওয়া ইসরাইল ও হামাসের শান্তি চুক্তি অনুযায়ী গাজা থেকে সমস্ত পণবন্দিদের মরদেহ ফেরত দেওয়ার কথা। কিন্তু এই চুক্তিতে নতুন জটিলতা তৈরি হয়েছে। মোট ২৮টি মরদেহের মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ৪টি মরদেহ ইসরাইলের হাতে তুলে দিয়েছে হামাস। ইসরাইলি সরকার মনে করছে, হামাস ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু মরদেহ আটকে রেখেছে। যদিও মধ্যস্থতাকারীরা মনে করছেন, গাজায় ব্যাপক ধ্বংসলীলা এবং ধ্বংসস্তূপের কারণে মরদেহ খুঁজে বের করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত হামাসকে পণবন্দিদের মরদেহ ফিরিয়ে দেওয়ার ডেডলাইন দেওয়া হয়েছে।
চুক্তি ভাঙলে কঠিন পরিণতি হবে: ইসরাইল
সোমবার হামাস ২০ জন জীবিত পণবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। এর বিনিময়ে ইসরাইল প্রায় ২,০০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্ত করেছে। এটি ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০-দফা শান্তি পরিকল্পনার অংশ।
তবে ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, যদি হামাস মরদেহগুলি ফিরিয়ে না দেয়, তবে তা চুক্তির লঙ্ঘন হবে এবং এর গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে।
মরদেহের সন্ধানে রেড ক্রসও
ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অফ দ্য রেড ক্রস (ICRC) এই প্রক্রিয়ায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। রেড ক্রস জানিয়েছে, গাজা অঞ্চলে ব্যাপক ধ্বংসের কারণে মৃতদেহগুলি খুঁজে বের করা একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ। এতে আরও বেশ কয়েক দিন বা সপ্তাহ লাগতে পারে।
মৃতদের প্রতি সম্মান জানাতে ICRC বডি ব্যাগ, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়ি এবং অতিরিক্ত কর্মী মোতায়েন করেছে, যাতে মর্যাদাপূর্ণ ও সম্মানজনকভাবে মরদেহগুলি হস্তান্তর করা যায়।
৪টি মরদেহের মধ্যে ২ জনের পরিচয় নিশ্চিত
পণবন্দিদের পরিবারগুলো মরদেহ ফেরতের জন্য গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ICRC উভয় পক্ষের কাছেই আবেদন জানিয়েছে যে, চুক্তির সম্পূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য মরদেহের সসম্মানে হস্তান্তর অত্যন্ত জরুরি।
সোমবার হামাস যে ৪টি মরদেহ হস্তান্তর করেছে, সেগুলি শনাক্তকরণের জন্য তেল আবিবের আবু কবির ফরেন্সিক ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার দুটি মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। তারা হলেন:
গাই ইলুজ (২৬): মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের কেরিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখা ইলুজ গত ৭ অক্টোবর ২০২৩-এ নোভা মিউজিক ফেস্টিভ্যালের সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। গাজার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
বিপিন জোশী (২৩): নেপালের এই ছাত্র ইসরাইলে কৃষিবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করতে এসেছিলেন এবং কিবুতজ আলুমিম থেকে তাকে অপহরণ করা হয়েছিল।
তবে এর আগেও হামাস এমন কিছু মরদেহ পাঠিয়েছে যা ইসরাইলি পণবন্দিদের ছিল না বলেও জানা গেছে।