মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের জন্য দুঃসংবাদ! চলতি বছরের শেষ দিকে আরও একবার বাড়তে চলেছে মোবাইল রিচার্জ প্ল্যানের দাম। সূত্রের খবর অনুযায়ী, দেশের বড় টেলিকম সংস্থাগুলি তাদের ট্যারিফ ১০-১২% পর্যন্ত বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়বে কোটি কোটি গ্রাহকের মাসিক খরচে।
কেন বাড়ছে এই খরচ?
টেলিকম সংস্থাগুলোর যুক্তি, গত কয়েক মাস ধরে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুত গতিতে বেড়েছে। বিশেষ করে জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত টানা পাঁচ মাস ধরে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে এবং পরিষেবার মান উন্নত রাখতে তাদের পরিকাঠামো খরচ বাড়ছে। সেই খরচ সামাল দিতেই ট্যারিফ বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই বলে মনে করছে অপারেটররা।
গত বছরের জুলাই মাসেই মোবাইল রিচার্জ প্ল্যানের দাম ১১ থেকে ২৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছিল। রিলায়েন্স জিয়ো, এয়ারটেলসহ অন্যান্য সংস্থাগুলি তখন একই পথে হেঁটেছিল। এক বছরের মাথায় আবার সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে।
ডেটাও কমতে পারে বেসিক প্ল্যানে!
শুধু দাম বাড়ানোই নয়, এবারের ধাক্কা আরও বড় হতে পারে। অনেক বেসিক প্ল্যানে থাকা ডেটার পরিমাণ কমানো হতে পারে। অর্থাৎ, যারা এখনও দৈনিক বা মাসিক বেশি ডেটা পাচ্ছেন, তাদের প্ল্যানে কাটছাঁট করা হতে পারে। এর ফলে, সারাদিন ইন্টারনেটে নির্ভরশীলদের জন্য অতিরিক্ত ডেটা প্যাক কেনা প্রায় বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়াতে পারে, যা মাসিক খরচ আরও বাড়িয়ে দেবে।
সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, মে মাসে ভারতে মোবাইল ইউজারের সংখ্যা প্রায় ১.০৮ ট্রিলিয়ন ছুঁয়েছে। রিলায়েন্স জিয়োর সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫৫ লাখ বেড়েছে, তাদের মার্কেট শেয়ার এখন প্রায় ৫৩%। এয়ারটেলের সক্রিয় ব্যবহারকারীও ১৩ লাখের বেশি বেড়েছে। এই বৃদ্ধির সুফল গ্রাহকদের কাছে না পৌঁছে উল্টো খরচের বোঝা চাপানো হচ্ছে, এমনটাই মনে করছেন অনেকে।
কী করবেন গ্রাহকরা?
বিশেষজ্ঞরা এই পরিস্থিতিতে গ্রাহকদের আগাম সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। নতুন ট্যারিফ কার্যকর হওয়ার আগে আপনার বর্তমান প্ল্যানটি ভালো করে যাচাই করে নিন এবং ভবিষ্যতের জন্য একটি সঠিক পরিকল্পনা করে রাখুন। সঠিক পদক্ষেপ না নিলে অপ্রত্যাশিতভাবে মোবাইল খরচ বেড়ে যেতে পারে।
এটা স্পষ্ট যে, মোবাইল পরিষেবার খরচ বাড়ানো এখন একরকম অনিবার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে টেলিকম সংস্থাগুলির উচিত গ্রাহকদের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পরিষেবা দেওয়া এবং একই সাথে এমন কিছু নতুন অফার বা সুবিধা নিয়ে আসা, যা এই খরচের চাপ কিছুটা কমাতে সাহায্য করে।