সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরুর দিনেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মন্তব্যের পাল্টা জবাব এবং রাজনৈতিক ভবিষ্যদ্বাণী করে বিতর্কের কেন্দ্রে এলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। একদিকে যখন এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনীতি উত্তাল, সেই আবহেই সোমবার অধিবেশন শুরুর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিরোধীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “সংসদ ড্রামা অর্থাৎ নাটক করার জায়গা নয়।” পাল্টা জবাব দিয়েছে কংগ্রেসও।
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া চ্যালেঞ্জ:
প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের মধ্যেই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি মোদীকে চ্যালেঞ্জ করে বলেন, “যতদিন নরেন্দ্র মোদি থাকবেন, ততদিন বিজেপি থাকবে। নরেন্দ্র মোদি না থাকলে বিজেপিও থাকবে না, ক্ষমতা থেকেই চলে যাবে।”
তাঁর যুক্তি, ২০১৪ সালের আগে রাজনাথ সিং, অমিত শাহ, নিতিন গডকড়ীর মতো হেভিওয়েট নেতারা থাকলেও কেউ বিজেপিকে ক্ষমতায় আনতে পারেননি, যা মোদী এনেছেন। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানান, “মোদি চলে গেলেই কোথাও আর পদ্মফুল ফুটবে না।”
পাশাপাশি, তিনি পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে বলেন, “যতদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আছে, কেউ কিছু বদলাতে পারবে না। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ যার উপর সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করে, তাঁর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”
রাজনৈতিক সৌজন্য এবং হিমশৈলের তত্ত্ব:
এই কড়া রাজনৈতিক বার্তার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী মোদী ও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত ‘সৌজন্যমূলক’ সম্পর্ক নিয়েও জল্পনা চলছে। সম্প্রতি সাংসদদের জন্য নবনির্মিত আবাসনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কুশল বিনিময় করেছিলেন এবং তাঁর পাশে আসতে বলেছিলেন। এর আগেও সংবিধান দিবস উপলক্ষে সংসদে মোদী তৃণমূল সাংসদের হাতের আঙুল কেমন আছে, সেই খোঁজ নিয়েছিলেন। পালটা সৌজন্য দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী শরীরের খোঁজখবর নিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদও।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের পরিস্থিতি অনেকটা ‘হিমশৈলের’ মতো, যেখানে যতটা উপরে দেখা যায়, তার চেয়ে অনেক বেশি কৌশল নিচে থাকে, যা চোখে পড়ে না। বিধানসভার আসন্ন যুদ্ধে এই ‘হিমশৈল’ কী নতুন কৌশল দেখায়, সেটাই এখন দেখার।