কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবসের আবহে সঙ্ঘ পরিবার তথা আরএসএস-কে (RSS) কেন্দ্র করে শুরু হলো নজিরবিহীন রাজনৈতিক যুদ্ধ। একদিকে দিগ্বিজয় সিংয়ের প্রশংসা মেশানো আক্রমণ, অন্যদিকে মানিকম ঠাকুরের ‘আল কায়েদা’ তুলনা— সব মিলিয়ে বছরশেষে চূড়ান্ত অস্বস্তিতে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড।
কী বললেন মানিকম ঠাকুর? লোকসভার কংগ্রেস সাংসদ মানিকম ঠাকুর আরএসএস-কে সরাসরি জঙ্গি সংগঠন ‘আল কায়েদা’-র সাথে তুলনা করে বসেন। তাঁর দাবি:
আল কায়েদা এবং আরএসএস একইভাবে কাজ করে; উভয়েই সমাজে ঘৃণা ছড়ায়।
সন্ত্রাসবাদীদের পদ্ধতি তাঁদের থেকে শেখার কিছু নেই।
আরএসএস আল কায়েদার মতোই সুসংগঠিত হতে পারে, কিন্তু কংগ্রেস ভালোবাসার রাজনীতিতে বিশ্বাসী।
দিগ্বিজয় সিংয়ের সেই ‘ভাইরাল’ পোস্ট: বিতর্কের সূত্রপাত মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দিগ্বিজয় সিংয়ের একটি পোস্ট ঘিরে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর একটি পুরনো ছবি শেয়ার করেন তিনি, যেখানে মোদীকে নেতাদের পায়ের কাছে মেঝেতে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে। দিগ্বিজয় লেখেন, “কীভাবে একজন তৃণমূল স্তরের স্বেচ্ছাসেবক থেকে প্রধানমন্ত্রী হওয়া যায়, সেটা সংগঠনের শক্তি।”
যদিও পরে বিতর্কের মুখে পড়ে তিনি সাফাই দেন, “আমি কেবল সংগঠনের প্রশংসা করেছি, কিন্তু আমি আরএসএস এবং মোদীজির নীতির ঘোর বিরোধী।”
বিজেপির পাল্টা তোপ: মানিকম ঠাকুরের এই ‘জিহাদি’ সংগঠনের সাথে তুলনা নিয়ে ফুঁসে উঠেছে বিজেপি। বিজেপি নেতা নলিন কোহলি প্রশ্ন তোলেন, “আরএসএস-কে কি কোনওদিন আল কায়েদার মতো জঙ্গি সংগঠনের সাথে তুলনা করা যায়? রাহুল গান্ধী এবং সোনিয়া গান্ধীর উচিত এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করা।”
তালেবান মানসিকতার অভিযোগ: শুধু মানিকম ঠাকুর নন, কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার ছেলে যতীন্দ্র সিদ্দারামাইয়াও আরএসএস-কে ‘তালেবান’-এর সাথে তুলনা করেছেন। তাঁর মতে, তালেবানরা যেভাবে ইসলামি নিয়ম চাপিয়ে দেয়, আরএসএস ঠিক সেভাবেই হিন্দুত্ব চাপিয়ে দিতে চায়। এই মন্তব্য ঘিরেও দক্ষিণ ভারতে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
প্রতিষ্ঠা দিবসের মেজাজে যখন কংগ্রেস ঘর গোছাচ্ছে, ঠিক তখনই নেতাদের এই লাগামহীন মন্তব্য বিজেপিকে বড় অস্ত্র তুলে দিল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।