গ্রেটার নয়ডার ডানাকুর এলাকায় এক তরুণীর মায়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে হঠাৎ ১.১৩ লক্ষ কোটি টাকা জমা হওয়ার ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন থেকে শুরু করে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ সকলেই হতবাক। ১৯ বছর বয়সী দীপক ওরফে দীপু নামে ওই তরুণী তার সদ্য প্রয়াত মায়ের কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে আসা একটি মেসেজ দেখে চমকে ওঠেন। গত ৩ আগস্ট রাতে তার ফোনে এই অস্বাভাবিক লেনদেনের মেসেজটি আসে, যেখানে ৩৭টি অঙ্কের একটি বিপুল পরিমাণ টাকা জমা হওয়ার কথা উল্লেখ ছিল।
দীপুর মা, গায়ত্রী দেবী, দুই মাস আগেই মারা গেছেন এবং তার পর থেকে দীপু মায়ের অ্যাকাউন্টটি পরিচালনা করছিলেন। মেসেজে আসা টাকার অঙ্ক দেখে তিনি প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারেননি। তিনি তার বন্ধুদের মেসেজটি দেখিয়ে অঙ্কের সংখ্যা গুনতে বলেন। ঘটনাটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে দীপকের কাছে তার আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিতদের ফোন আসতে শুরু করে। সবাই তার হঠাৎ ভাগ্য পরিবর্তন নিয়ে কৌতূহলী হয়ে ওঠে। এতে বিরক্ত হয়ে দীপু তার ফোন বন্ধ করে দেন।
এদিকে, এই খবরটি ছড়িয়ে পড়তেই কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্ক একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়ে এই দাবিকে উড়িয়ে দিয়েছে। এক্স (পূর্বে টুইটার) হ্যান্ডেলে ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক পরিমাণ টাকা জমা হওয়ার খবরটি ভুয়ো। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের নিজেদের অ্যাকাউন্টের বিবরণ কোটাকের অ্যাপ বা নেট ব্যাঙ্কিং প্ল্যাটফর্মে যাচাই করার অনুরোধ জানিয়েছে এবং নিশ্চিত করেছে যে তাদের সিস্টেমগুলো স্বাভাবিক এবং নিরাপদভাবে কাজ করছে।
তবে, এই রহস্যজনক লেনদেনের ঘটনায় আয়কর বিভাগ তদন্ত শুরু করেছে। কর্মকর্তারা খতিয়ে দেখছেন যে কীভাবে একজন মৃত গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে এত বিশাল পরিমাণ টাকা জমা হলো। তারা সন্দেহ করছেন যে এটি হয়তো কোনো ব্যাঙ্কিং বা প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে ঘটেছে, অথবা এর সঙ্গে অর্থ পাচারের মতো কোনো বড় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের যোগ থাকতে পারে। বিস্তারিত তদন্তের পরই আসল সত্য সামনে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই খবরটি সামাজিক মাধ্যমে দ্রুত ভাইরাল হয়েছে। অনেক নেটিজেন রসিকতা করে দীপককে মুহূর্তের মধ্যে শত কোটিপতি হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। আবার অনেকে ব্যাংকিং এবং সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে আনন্দের বদলে এই ঘটনায় দীপকের মনে দুশ্চিন্তাই বেশি।