বীরভূমের রাজনৈতিক অঙ্গনে আবারও উত্তেজনা ফিরে এসেছে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর একটি পোস্টারে কালি লাগানোর অভিযোগে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ধিক্কার মিছিল বের করা হয়। এই মিছিল থেকেই বীরভূম জেলা পরিষদের সভাপতি কাজল শেখের বিতর্কিত মন্তব্য নতুন করে রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
সোমবার জেলা জুড়ে অনুব্রত মণ্ডলের ডাকে আয়োজিত এই ধিক্কার মিছিলে কাজল শেখ বিরোধী বিজেপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “তোমাদের বাবার ভাগ্য ভাল সেদিন জেলা পরিষদের অফিস বন্ধ ছিল। না হলে তোমরা যখন মুখ্যমন্ত্রীর অবমাননা করছিলে, ওই সময় যদি আমি অফিসে থাকতাম, তা হলে তোমাদের বুকে লাথি মেরে হাড়গোড় ভেঙে দিতাম।”
তিনি আরও বলেন, “যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লক্ষ্মীর ভাণ্ডার-সহ একাধিক প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলার মানুষকে সাহায্য করছেন, তাঁকেই কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা আমরা সহ্য করব না।” তাঁর এই কঠোর মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়া এবং রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
ঘটনার সূত্রপাত গত শনিবার, যখন বিজেপি কর্মীরা তিলপাড়া ব্যারেজের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে প্রতিবাদ মিছিল করে জেলা প্রশাসনিক ভবনে ডেপুটেশন জমা দিতে যান। অভিযোগ, সেই সময় তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর একটি পোস্টারে কালি লাগান। এই ঘটনার পর থেকেই তৃণমূল নেতৃত্ব ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ‘বীরভূমের বাঘ’ হিসেবে পরিচিত অনুব্রত মণ্ডলও বলেন, “আমরাও বিরোধী ছিলাম, কিন্তু কোনও দিন কারও ছবিতে কালি লাগাইনি। এটা ভদ্রতা নয়।” এরপর রবিবার তৃণমূল কোর কমিটির বৈঠক থেকে ধিক্কার মিছিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কাজল শেখের এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিজেপি। বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “তৃণমূল নেতাদের ভাষা এইরকমই। আমরা আন্দোলন করলে আমাদের উপরেই হামলা হয়, আর তারপরে আমাদেরই গ্রেপ্তার করা হয়।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, তৃণমূলের পক্ষ থেকে বারবার গণতন্ত্রের উপর হামলা করা হচ্ছে।
এই ঘটনায় বীরভূমের রাজনৈতিক পরিবেশ আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে, এবং এই মন্তব্য আগামী দিনে রাজনৈতিক বিতর্কের পালে নতুন করে হাওয়া দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।