দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিক্যাল ছাত্রীর গণধর্ষণ কাণ্ডে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। চিকিৎসাধীন নির্যাতিতার সঙ্গে কাউকেই দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে বারবার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়কে বাধা দেওয়ার পর, সোমবার সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল। আজ ওড়িশা থেকে নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে আসা সরকারি আধিকারিক শিপ্রা বাজপেয়ীকেও বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
কর্তৃপক্ষের বাধা ও ধুন্ধুমার:
আজ সকালে ‘ভয়েস অফ অভয়া’, ‘ভয়েস অফ উইমেন্স’-এর সদস্যরা এবং আরজি কর হাসপাতালের একদল চিকিৎসক দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে আসেন। নির্যাতিতার সঙ্গে কথা বলতে এলে বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষীরা তাঁদের আটকে দেন। যার জেরে হাসপাতাল চত্বরে কার্যত ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধে। ক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষীদের দেওয়া ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন।
ওড়িশার জলেশ্বর থেকে আসা সরকারি আধিকারিক শিপ্রা বাজপেয়ীকে আটকানো হলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “মুখে আঠা, সেলোটেপ লাগানোর মতো অবস্থা সকলের। কেউ কিছু বলছে না।” তিনি আরও বলেন, “আমি একা এসেছি। আমাদের মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম। কিন্তু আমাকে ঢুকতে দেওয়া হল না। এটা তো রাজনৈতিক ঘটনা নয়। এটা তো একটা সামাজিক ঘটনা।”
আন্দোলনে চিকিৎসক ও অধ্যাপকরা:
আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় আরজি কর হাসপাতালের বিশিষ্ট চিকিৎসক বিপ্লব চন্দ্র-সহ আরও বেশকিছু চিকিৎসক ও অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের।
চিকিৎসক বিপ্লব চন্দ্র বলেন, “আমরা তো অন্য কিছু চাই না। কলেজের প্রিন্সিপাল, পুলিশ কমিশনার, জেলাশাসকরা এসে মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুক। আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় সঞ্জয় রায়কে সাজা দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রেও কয়েকজনকে গ্রেফতার হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীকালে অভিযুক্তদের যে ছেড়ে দেওয়া হবে না, তা কে বলতে পারে? আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমাদের উদ্বেগের কথা প্রশাসনকে শুনতে হবে।”
দুর্গাপুর নারী নিগ্রহ বিরোধী কমিটির সদস্যরা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলছেন রাতে মহিলারা বেরোবেন না। এর থেকে লজ্জাজনক ঘটনার কিছু হতে পারে না। আমাদের এই শান্তিপূর্ণ আবেদনে কীসের বাধা?”
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাতে হস্টেল ক্যাম্পাসের বাইরে ওড়িশার মেডিক্যাল পড়ুয়াকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৫ জন অভিযুক্তের মধ্যে পুলিশ ৩ জনকে গ্রেফতার ও একজনকে আটক করেছে।