পাঞ্জাবের গুরুদাসপুর থেকে আসা একটি ভয়ঙ্কর ভিডিও সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর দেশজুড়ে শোরগোল সৃষ্টি হয়েছে। সেই ভিডিওতে দেখা যায়, হরজিত কৌর নামে এক পুত্রবধূ তাঁর শাশুড়ি গুরবাজন কৌরকে চুল ধরে টেনে মারধর করছেন। এই নির্মমতা থামাতে পুত্রবধূর ছোট্ট ছেলে বারবার কাকুতি মিনতি করলেও তিনি কর্ণপাত করেননি। ভিডিওটিতে চড়, থাপ্পড়, লাথি, গালিগালাজ এবং শেষে স্টিলের গ্লাস দিয়ে আঘাতের দৃশ্যও ধরা পড়েছে।
কেন এই নির্মমতা?
নির্যাতিতা গুরবাজন কৌর পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন, পুত্রবধূ হরজিত কৌর তাঁর সব সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে চাপ দিচ্ছিলেন। সম্পত্তি দিতে অস্বীকার করলেই তাঁর ওপর চলত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। রবিবার এই ঘটনার সূত্রপাত হয়, যখন হরজিত বুঝতে পারেন যে শাশুড়ি তাঁর নির্যাতনের ভিডিও তুলছেন। এতে তিনি আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
ভিডিওতে দেখা যায়, মারধরের এক পর্যায়ে গুরবাজনকে সোফায় ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন হরজিত। এরপর একটি স্টিলের গ্লাস হাতে তুলে শাশুড়ির মাথায় দু’বার আঘাত করেন। আত্মরক্ষায় প্রৌঢ়া পা দিয়ে ঠেলার চেষ্টা করলে হরজিত তাঁর পা ধরে ফেলে একের পর এক থাপ্পড় মারেন।
মদ খেয়ে নির্যাতন: মুখ খুলল নাবালক নাতি
এই নির্মম ঘটনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী হলো গুরবাজনের নাতি চরৎবীর সিং, যে লুকিয়ে পুরো ঘটনার ভিডিওটি তুলেছে। চরৎবীর জানায়, তার মা হরজিত কৌর মদ্যপান করেন এবং মদ্যপ অবস্থায় ঠাকুমাকে মারধর করেন। শুধু তাই নয়, হরজিত তার বাবা (স্বামীর) সঙ্গেও ঝগড়া করেন এবং বাবাকে মারধর করেন।
চরৎবীরের আরও অভিযোগ, “মা আমাকে মারধর করে, বাবাকেও আঘাত করে। অনেক সময় বাবাকে জোর করে মদ খাওয়ায়।” সে আরও কিছু ভিডিও শেয়ার করেছে, যেখানে দেখা যায় হরজিত স্বামীকে স্লিপার দিয়ে মারছেন। অন্য একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ঠাকুমার পাশে দাঁড়াতে না পারে তার মা তাকে ঘরে আটকে রেখেছেন।
চরৎবীর দাবি করে, প্রমাণ হিসেবে সে ভিডিও তুলেছে। তার কথায়, “একবার মা আমার বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেছিলেন। হুমকিও দিয়েছেন, আবার একই কাজ করবেন।”
এই ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত হরজিত কৌরকে আপাতত সতর্ক করেছে। তবে চরৎবীরের দাবি, শুধু সতর্ক করলে হবে না, মায়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।