বিধানসভা নির্বাচনের মুখে মালদা জেলা তৃণমূলের পুরনো গোষ্ঠীকোন্দল ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলায় পা রাখার ঠিক আগের মুহূর্তে পুরাতন মালদা পুরসভার ছ’দফার কাউন্সিলর বশিষ্ঠ ত্রিবেদী দলের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খোলেন, যা তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের ছবি স্পষ্ট করে দিয়েছে।
চেয়ারম্যান সরাতে টাকা লেনদেনের অভিযোগ:
এই কোন্দলের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে পুরাতন মালদা পুরসভা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সম্প্রতি চেয়ারম্যান কার্তিক ঘোষকে সরানো হলেও এখনও নতুন চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে ভাইস চেয়ারম্যান সফিকুল ইসলাম বোর্ড অফ কাউন্সিলর্স (BOC) সভা ডাকলে তা নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়। কাউন্সিলর বিশ্বজিৎ হালদার সেই BOC-কে ‘অবৈধ’ দাবি করে রেজুলেশন খাতা কেড়ে নেন এবং কয়েকজন কাউন্সিলরের স্বাক্ষর কেটে দেন। এর ফলে ভাইস চেয়ারম্যান তাঁর বিরুদ্ধে মালদা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
এই পরিস্থিতিতে সরব হয়েছেন বর্ষীয়ান কাউন্সিলর বশিষ্ঠ ত্রিবেদী। তিনি বলেন, পুরভোটের ঠিক আগে চেয়ারম্যান সরানোর সিদ্ধান্তে কর্মীদের মধ্যে বিভাজন তৈরি হয়েছে। তাঁর বিস্ফোরক মন্তব্য:
“মানুষ বিভিন্ন ধরনের কথা বলছে… এর পিছনে টাকা-পয়সার লেনদেন হচ্ছে। এখানকার বিজেপি বিধায়ক যোগাযোগ না রাখলেও, এই ডামাডোলে আমাদের ক্ষতি হচ্ছে। ব্যক্তিস্বার্থ নয়, আগে পার্টির স্বার্থটাই সবাইকে দেখতে হবে।”
তৃণমূল ও বিজেপির প্রতিক্রিয়া:
তৃণমূলের জেলা চেয়ারপার্সন চৈতালি ঘোষ সরকার অবশ্য এই মন্তব্যে কোনও আমল দেননি। তিনি বলেন, “কে কী বলছে, সেটা আমাদের কাছে নগণ্য। আমাদের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক কিছু ভেবেই এসব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। এতে কর্মীদের মনোবল ভাঙার কোনও কারণ নেই।”
অন্যদিকে, এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিজেপি তৃণমূলকে তীব্র কটাক্ষ করেছে। দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বশিষ্ঠ ত্রিবেদীর বক্তব্যকে সমর্থন করে বলেন, “বশিষ্ঠ ত্রিবেদী একদম সঠিক কথা বলেছেন। চেয়ারম্যান সরাতে লেনদেন হয়েছে। নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগেও লেনদেন হবে। বাস্তব কথা বলে উনি আর দলে থাকবেন কি না সেটাই এখন চিন্তার বিষয়।”