সম্প্রতি বিজেপি নেতা অমিত মালব্যের ‘বাংলা বলে কোনো ভাষা নেই’ এবং দিল্লি পুলিশের বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশী’ ভাষা বলার মন্তব্যের প্রতিবাদে সরব হলেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা। বুধবার ডুরান্ড কাপে নামধারী স্পোর্টস অ্যাকাডেমির বিরুদ্ধে ম্যাচে গ্যালারিতে প্রতিবাদী ব্যানার নিয়ে উপস্থিত হন লাল-হলুদ সমর্থকরা। এই ঘটনায় রাজ্যজুড়ে রাজনৈতিক ও সামাজিক বিতর্ক নতুন মাত্রা পেল।
ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা হাতে ধরা ব্যানারে লেখেন, “ভারত স্বাধীন করতে সেদিন পরেছিলাম ফাঁসি! মায়ের ভাষা বলছি বলে, আজকে বাংলাদেশী?” এই স্লোগানের মাধ্যমে তাঁরা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে বাঙালিদের বলিদান এবং অবদানের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। এর আগেও ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক ইস্যুতে নিজেদের প্রতিবাদী অবস্থান তুলে ধরেছেন, যা ক্লাবের ঐতিহ্যেরই অংশ।
১৯২০ সালে অবিভক্ত ভারতে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের জন্ম হয়েছিল প্রতিবাদ ও আত্মমর্যাদার প্রতীক হিসেবে। সেই ঐতিহ্য বজায় রেখে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা বরাবরই যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হন। গত বছর আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে এক চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদেও তাঁরা গ্যালারিতে ব্যানার প্রদর্শন করেছিলেন।
অমিত মালব্যের মন্তব্য এবং দিল্লি পুলিশের আচরণের পর রাজ্যজুড়ে বাংলা ভাষার সম্মান নিয়ে তীব্র বিতর্ক চলছে। ভারতে দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাষা হওয়া সত্ত্বেও বাংলাকে অবজ্ঞা করা এবং বাংলাভাষীদের হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের এই প্রতিবাদ ফুটবল মাঠের গণ্ডি পেরিয়ে এক সামাজিক বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শাসক দল ও বিরোধী দলের মধ্যে যখন এই বিষয়ে তর্ক-বিতর্ক চলছে, তখন সাধারণ মানুষের এই স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ এই বিতর্কে এক নতুন মাত্রা যোগ করল। ইস্টবেঙ্গলের এই পদক্ষেপ প্রমাণ করে যে, বাংলা ভাষা ও বাঙালির আত্মমর্যাদার প্রশ্ন ফুটবল সমর্থক থেকে শুরু করে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের কাছেই অত্যন্ত সংবেদনশীল।