শত্রুদেশের রক্তচাপ বাড়িয়ে দিয়ে ভারত ফের তার সামরিক শক্তির চরম আস্ফালন দেখাল। এবার পরমাণু শক্তিচালিত ডুবোজাহাজ বা সাবমেরিন থেকে সফলভাবে পরমাণু অস্ত্রবহনে সক্ষম ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জ ব্যালিস্টিক মিসাইল ছুড়ল ভারতীয় নৌবাহিনী। গত মঙ্গলবার বঙ্গোপসাগরের বুক চিরে পরমাণু শক্তিচালিত সাবমেরিন ‘INS Arighaat’ থেকে এই অত্যাধুনিক মিসাইলটি উৎক্ষেপণ করা হয়।
বিশাখাপত্তনম উপকূলের কাছে করা এই পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ ভারতের প্রতিরক্ষা পরিকাঠামোকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেল। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, এর ফলে সমুদ্রের তলদেশ থেকে হামলা চালানোর ক্ষেত্রে ভারত এখন অনেকটাই অপ্রতিরোধ্য। এই মিসাইলটির নাম ‘K-4 সাবমেরিন লঞ্চড ব্যালিস্টিক মিসাইল’ (SLBM)। যা প্রায় ৩,৫০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে সক্ষম। ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এবং ‘মিসাইল ম্যান’ ডঃ এপিজে আব্দুল কালামের সম্মানে এই সিরিজের নাম রাখা হয়েছে ‘K-সিরিজ’।
ভারতের এই প্রযুক্তির মূল লক্ষ্য হলো ‘সেকেন্ড স্ট্রাইক ডিটারেন্স’। এর সহজ অর্থ হলো—যদি কোনো শত্রুদেশ ভারতের ওপর প্রথমে পারমাণবিক হামলা চালায়, তবে ভারত সমুদ্রের অতল গভীরে লুকিয়ে থাকা সাবমেরিন থেকে পালটা বিধ্বংসী পরমাণু হামলা চালাতে পারবে। বিশ্বের মাত্র হাতেগোনা কয়েকটি দেশের কাছে এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি রয়েছে। জল, স্থল এবং আকাশ—এই তিন ক্ষেত্র থেকেই এখন পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগের ক্ষমতা বা ‘নিউক্লিয়ার ট্রায়াড’ পূর্ণ করল ভারত।
ভূমি থেকে ছোড়া ‘অগ্নি-৩’ মিসাইলের প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করেই তৈরি করা হয়েছে এই সামুদ্রিক সংস্করণটি। এটি প্রথমে সাবমেরিন থেকে বের হয়ে সমুদ্রের উপরে উঠে আসে এবং তারপর এর শক্তিশালী মোটর চালু হয়ে লক্ষ্যবস্তুর দিকে ধেয়ে যায়। ভারতের ‘অরিহন্ত’ (Arihant) শ্রেণির সাবমেরিনগুলো থেকে এই মারণাস্ত্র প্রয়োগ করা সম্ভব, যা দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে ভারতের আধিপত্য আরও মজবুত করল।