“মহিলাদের বাড়িতে রাখতে সূর্যাস্তের পর সব দোকান বন্ধ হোক!” দুর্গাপুর কাণ্ডে মমতাকে চরম কটাক্ষ শুভেন্দুর

দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিক্যাল পড়ুয়ার গণধর্ষণ কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) মন্তব্য ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্কের আগুনে এবার ঘি ঢাললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রবিবার নিজের বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রামে এসে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে পাল্টা কটাক্ষ করে বলেন, “সূর্যাস্তের পর সমস্ত দোকান বন্ধ করে দিন লকডাউন এর মতো। তা হলে মহিলারা বাড়িতেই থাকবে।”

মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে শুভেন্দু বলেন, “এই ঘটনা বাংলার লজ্জা। একজন বাঙালি হিসেবে নিজেকে লজ্জিত লাগছে। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যা করার কথা, তা করছেন বিরোধী দলনেতা।”

মুখ্যমন্ত্রীকে ‘ক্রুয়েল মুখ্যমন্ত্রী’ আখ্যা
দুর্গাপুরকাণ্ডের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নীরবতা নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী কড়া সমালোচনা করেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে ‘সবচেয়ে ক্রুয়েল মুখ্যমন্ত্রী’ আখ্যা দিয়ে বলেন:

“টাইগার হিলে ছুটি কাটাতে গেছেন মুখ্যমন্ত্রী, অথচ ওই মেয়ের পরিবারের সঙ্গে একবারও কথা বলেননি। আমরা আশা করেছিলাম, উনি সবার আগে গিয়ে ওই মেয়ের সঙ্গে দেখা করবেন। তার পর চাইলে চাটার্ড প্লেনে যেতেন।”

শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়নি। এবং যারা ধরা পড়েছে, তারা স্থানীয় তৃণমূলের নেতা।

ডাক্তারদের মুখ বন্ধ রাখার অভিযোগ
নির্যাতিতার শারীরিক অবস্থা নিয়েও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর দাবি:

ডাক্তারদের মুখ বন্ধ রাখতে মুখ্যমন্ত্রীর চাপ রয়েছে। তিনি বলেন, “ওই মেয়েটির শারীরিক অবস্থার খবর ডাক্তারদের মুখ থেকে জানতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তাঁদের মুখ খুলতে বারণ করা হয়েছে।”

কোনও মেডিকেল রিপোর্ট পরিবারকে দেওয়া হয়নি।

তিনি জানান, ওড়িশা সফরের পর তিনি নিজে জলেশ্বরে গিয়ে আক্রান্ত তরুণীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন। শুভেন্দু অধিকারী এই ঘটনাকে ‘অভয়ার ঘটনার পর আরও এক মর্মান্তিক অধ্যায়’ বলে উল্লেখ করে ‘কন্যা বাঁচাও, বাংলা বাঁচাও’ স্লোগান দেন।

মুখ্যমন্ত্রী কী বলেছিলেন?
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনাকে ‘শকিং’ উল্লেখ করে পুলিশের কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়ার কথা জানান। তবে পাশাপাশি তিনি প্রশ্ন তোলেন, “কীভাবে ওই প্রাইভেট কলেজের ছাত্রী রাত সাড়ে ১২টায় ক্যাম্পাসের বাইরে বেরোলেন?” তিনি আরও বলেছিলেন, “পুলিশ তো জানতে পারে না কে কখন রাতে বেরোচ্ছে। কেউ যদি রাত সাড়ে বারোটায় বেরিয়ে কোথাও যায়, পুলিশ তো বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছতে পারবে না। নিজেদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিজেদেরও খেয়াল রাখতে হবে।” মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যকে ঘিরেই রাজ্যের রাজনীতিতে বিতর্কের ঝড় উঠেছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy