দেশের ইতিহাসে এক বিরল নজির গড়ে কেরলের বিখ্যাত সবরীমালা মন্দিরে পুজো দিলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। বুধবারের এই সফরটি ভারতীয় রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে সবরীমালা তীর্থস্থানে প্রথম সফর। এর আগে শুধুমাত্র ১৯৭০-এর দশকে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ভি ভি গিরি এই মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন বলে জানা যায়।
পাম্পা থেকে সন্নিধানম পর্যন্ত পাহাড়ি পথ অতিক্রম করার জন্য এদিন রাষ্ট্রপতির জন্য বিশেষ চার-চাকা গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এই ঐতিহাসিক সফরকে কেন্দ্র করে ত্রিবাঙ্কুর দেবস্বম বোর্ড এবং রাজ্য পুলিশ প্রশাসন গোটা এলাকাকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলেছিল।
পবিত্র ইরুমুডি মাথায় ১৮টি সিঁড়ি বেয়ে দর্শন
সন্নিধানমে পৌঁছানোর পর রাষ্ট্রপতি মুর্মু ১৮টি পবিত্র সিঁড়ি বেয়ে ভগবান আয়াপ্পার দরবারে পৌঁছন। সেখানে তাঁকে স্বাগত জানান কেরলের দেবস্বম মন্ত্রী ভি এন বাসাবন এবং ত্রিবাঙ্কুর দেবস্বম বোর্ডের সভাপতি পি এস প্রশান্ত। মন্দিরের তন্ত্রি কন্দরারু মহেশ মোহনারু পূর্ণ কুম্ভ দিয়ে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান।
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু নিজে মাথায় পবিত্র ইরুমুডিকেট্টু (দেবতার উদ্দেশে নিবেদিত পুজোর সামগ্রী) নিয়ে আয়াপ্পার দর্শন করেন। প্রধান পুরোহিত মেলশান্তি তাঁর ও তাঁর দলের ইরুমুডিকেট্টু গ্রহণ করে পুজো সম্পন্ন করেন। এরপর রাষ্ট্রপতি কাছাকাছি মালিকাপ্পুরম দেবীর মন্দিরেও পুজো দেন। মধ্যাহ্নভোজ ও বিশ্রামের সময় সাধারণ ভক্তদের দর্শনে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
নারী প্রবেশাধিকার বিতর্কের মাঝে এই সফর কেন গুরুত্বপূর্ণ?
সবরীমালা মন্দিরে আয়াপ্পা পূজিত হন। পুরাণ মতে, আয়াপ্পা হলেন শিব এবং বিষ্ণুর মোহিনী রূপের পুত্র এবং তিনি চিরকাল ব্রহ্মচারীর ধর্ম পালন করেছেন। এই কারণেই ঐতিহ্যের দোহাই দিয়ে মন্দির কমিটি ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সি মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিল।
মহিলাদের প্রবেশাধিকার নিয়ে একসময় সুপ্রিম কোর্টের রায়কে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে তীব্র আন্দোলন, বিতর্ক এবং উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল। সেই নারী প্রবেশাধিকার বিতর্কের আবহে একজন মহিলা রাষ্ট্রপতি হিসেবে দ্রৌপদী মুর্মুর এই মন্দিরে পা রাখা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহল মহল।