মসজিদে ঢুকে মা ও দুই মেয়েকে খুন! উত্তরপ্রদেশে চাঞ্চল্যকর রহস্যের কিনারা, কী এমন ঘটল যে শিক্ষকের ছাত্ররাই হয়ে উঠল হত্যাকারী?

উত্তরপ্রদেশের বাগপথ জেলার গাংনৌলিতে মসজিদে মা ও তাঁর দুই শিশুকন্যার নৃশংস হত্যাকাণ্ডে বড়সড় সাফল্য পেল পুলিশ। শনিবারের এই ত্রিমুখী খুনের ঘটনায় পুলিশ যে দু’জন নাবালককে গ্রেফতার করেছে, তাদের স্বীকারোক্তি শুনে চমকে উঠেছে গোটা এলাকা। এই নাবালকরাই কেন শিক্ষাদাত্রী ও তাঁর দুই কন্যাকে খুন করল, সেই কারণ ঘিরে শুরু হয়েছে চাঞ্চল্য।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত দুই নাবালক মুফতির কাছেই পড়াশোনা করতে যেত। যদিও তাদের দাবি সঠিক কিনা, তা তদন্তের পর জানা যাবে।

মুফতির বকুনিই কি খুনের কারণ?

পুলিশের কাছে ধৃত দুই নাবালক জানিয়েছে, মসজিদের মুফতি ইব্রাহিম তাদের প্রায়শই মারধর করতেন এবং বকাবকি করতেন। এই অপমান তাদের এতটাই খারাপ লেগেছিল যে তারা মুফতির উপর প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে।

শনিবার তারা মসজিদে পড়তে যায়। মুফতি ইব্রাহিম সেই সময় সেখানে ছিলেন না। মুফতির অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে তারা তাঁর স্ত্রী এবং দুই মেয়েকে নৃশংসভাবে খুন করে বলে অভিযোগ। নিহতরা হলেন মুফতির স্ত্রী আলিম ইসরানা (৩০) এবং তাঁদের দুই কন্যা সোফিয়া (৫) ও সুমাঝ্যা (২)। মুফতি ইব্রাহিম শামলি জেলার সুন্না গ্রামের বাসিন্দা, যিনি কয়েক বছর ধরে গাংনৌলির এই মসজিদে বসবাস করছিলেন।

যেভাবে প্রকাশ্যে এল ঘটনাটি:

খুনের ঘটনার পর অন্য কয়েকটি শিশু শিক্ষা নিতে মসজিদে যায় এবং মুফতিকে ডাকতে শুরু করে। ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ না পাওয়ায় তারা ভেতরে প্রবেশ করে। মসজিদের ভেতরের দৃশ্য দেখে তাদের চোখ কপালে ওঠে এবং তারা চিৎকার শুরু করে দেয়। চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে আসে এবং পুলিশকে খবর দেয়।

পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় এবং তদন্ত শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই মুফতি ইব্রাহিমও সেখানে এসে পৌঁছান।

এসপি সুরাজ কুমার রায় জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে দুই নাবালক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা জানিয়েছে যে মুফতির বকুনিতে ক্ষিপ্ত হয়েই এই কাজ করেছে। যদিও পুলিশ তাদের দেওয়া তথ্য যাচাই করে দেখছে। অন্যান্যদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখার কাজও চলছে। এই ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy