মধ্যপ্রদেশের সিধি জেলায় এক ২০ বছর বয়সী দলিত তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে নিজের বাগদত্তার সঙ্গে বাইকে করে ঘুরতে বেরিয়ে এই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শিকার হন ওই তরুণী। এই ঘটনার পর থেকেই রাজ্যজুড়ে নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তরুণী ও তাঁর বাগদত্তা কাঠৌঠা গ্রামের কাছে একটি নির্জন পাহাড়ি এলাকায় গিয়েছিলেন। সেই সময় চারজন যুবক তাদের ঘিরে ধরে। তারা প্রথমে তরুণীর বাগদত্তাকে বেধড়ক মারধর করে এবং তাঁকে জোর করে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়। এরপর ওই চার যুবক তরুণীকে ধর্ষণ করে।
কোনো রকমে পালিয়ে তরুণী তাঁর বাগদত্তার সাথে যোগাযোগ করেন এবং তাঁরা দুজন সেমারিয়া থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথেই পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ASP) অরবিন্দ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজনের মধ্যে তিনজনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি একজন পলাতক অভিযুক্তের খোঁজে পাঁচটি বিশেষ পুলিশ দল গঠন করে তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে।
এই বর্বরোচিত ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিরোধী দল কংগ্রেস রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছে। কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি জিতু পতওয়ারি এই ঘটনাকে ‘নারীর প্রতি অপমান এবং মানবতার লজ্জাজনক দৃষ্টান্ত’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, মধ্যপ্রদেশে আইনশৃঙ্খলার ভয়াবহ অবনতি ঘটেছে। পতওয়ারি আরও উল্লেখ করেন যে, গত তিন বছরে রাজ্যে ৭ হাজার ৪১৮টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে দলিত ও আদিবাসী নারীদের ওপর সংঘটিত অপরাধের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। তাঁর মতে, প্রতিদিন গড়ে সাতজন দলিত বা আদিবাসী নারী নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।
এই ঘটনায় স্থানীয় জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ও ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রশাসন কড়া নজরদারি চালাচ্ছে এবং জনগণকে শান্ত থাকার আবেদন জানিয়েছে।