আগামীকাল থেকেই ভোটার তালিকা সংক্রান্ত শুনানি শুরু হতে চলেছে। তার ঠিক আগেই নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট করে দিল যে, যাঁরা CAA-এর মাধ্যমে নাগরিকত্বের শংসাপত্র পেয়েছেন, তাঁরা সেই নথি ব্যবহার করেই ভোটার তালিকায় নাম তুলতে পারবেন। এতদিন কমিশনের নথির তালিকায় এই সার্টিফিকেটের উল্লেখ না থাকায় মতুয়াদের মধ্যে ব্যাপক ধন্দ তৈরি হয়েছিল। কমিশনের এই বার্তার পর সেই অনিশ্চয়তা কাটল।
আবেদনের প্রক্রিয়া: কমিশন জানিয়েছে, ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য মতুয়াদের নতুন করে ‘ফর্ম ৬’ পূরণ করতে হবে। নাগরিকত্বের শংসাপত্রে আবেদনকারীর যাবতীয় তথ্য থাকায়, এটি ‘লিঙ্ক ডকুমেন্ট’ বা ম্যাপিংয়ের ক্ষেত্রেও গ্রাহ্য হবে। অর্থাৎ, ২০০২ সালের পুরনো নথি দেখানোর জটিলতা থেকেও মুক্তি পেতে পারেন তাঁরা।
রাজনৈতিক চাপানউতোর: কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ইতিমধ্যেই ৭০ হাজার মানুষ CAA সার্টিফিকেট পেয়েছেন, তাঁদের নাম ভোটার তালিকায় থাকবেই। হিন্দু শরণার্থীদের জন্য বিজেপিই একমাত্র ভরসা।” অন্যদিকে, তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর প্রশ্ন তুলেছেন আধার কার্ডের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে। তাঁর কথায়, “সার্টিফিকেট গ্রাহ্য হবে ঠিক আছে, কিন্তু আধার কার্ডকে কেন গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না?”
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ: উল্লেখ্য, চলতি মাসের শুরুতেই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল যে, কেবল নাগরিকত্বের আবেদন করলেই ভোটাধিকার পাওয়া যাবে না; আগে নাগরিকত্ব নিশ্চিত হতে হবে। সেই নির্দেশ মেনেই কমিশন এবার CAA শংসাপত্রকে বৈধতা দিল।
মোদীর প্রতিশ্রুতি: সম্প্রতি বঙ্গ সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মতুয়া ও নমঃশূদ্রদের মর্যাদার সঙ্গে ভারতে থাকার অধিকারের কথা বলেছিলেন। তিনি আশ্বস্ত করেছিলেন যে বিজেপি সরকার তাঁদের পাশে রয়েছে। শুনানির আগের দিন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত মতুয়াদের আইনি ও সামাজিক লড়াইয়ে এক বড় জয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।