২০২১ সালের ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় এবার কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে বড়সড় ধাক্কা খেল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই)। নিহত বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া সাব-ইন্সপেক্টর রত্না সরকার এবং হোমগার্ড দীপঙ্কর দেবনাথের শর্তসাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করেছেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। গত ১৬ জুলাই থেকে এই দুই পুলিশ কর্মী সিবিআই হেফাজতে ছিলেন।
জামিন মঞ্জুর করার সময় আদালত কয়েকটি কঠোর শর্ত আরোপ করেছে। বিচারপতি সেনগুপ্ত স্পষ্ট জানিয়েছেন:
১. এই দুই পুলিশ কর্মী আর নারকেলডাঙা থানায় কাজ করতে পারবেন না।
২. নিহত অভিজিৎ সরকারের বাড়ির ত্রিসীমানার মধ্যে তাঁরা প্রবেশ করতে পারবেন না।
৩. মামলার সঙ্গে যুক্ত কোনো ব্যক্তি বা সাক্ষীকে হুমকি দিতে পারবেন না।
৪. তদন্তের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো নথি বা প্রমাণ নষ্ট করতে পারবেন না।
৫. মামলার পরবর্তী শুনানির দিন তাঁদের নিয়মিত আদালতে হাজির থাকতে হবে।
এদিনের শুনানিতে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত নিম্ন আদালতের কার্যপ্রণালী নিয়েও কড়া মন্তব্য করেন। তিনি সিবিআই আদালতের সমালোচনা করে বলেন, “বিচারবিভাগীয় শৃঙ্খলা মাথায় রাখা উচিত নিম্ন আদালতের।” বিচারপতি আরও বলেন, “একই ইস্যুতে যখন অন্য এক অভিযুক্তের করা মামলায় হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণ রাখছে, তখন নিম্ন আদালতের উচিত ছিল মামলাটি মুলতবি রাখা। এই দুই পুলিশ কর্মীকে এজলাস থেকে জেলে পাঠানো বিচারবিভাগীয় শৃঙ্খলা নয়।”
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার দিন, অর্থাৎ ২ মে বিকেলে, কলকাতার কাঁকুড়গাছিতে বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ ওঠে। প্রাথমিকভাবে কলকাতা পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করলেও পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ ওঠে, তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করা হচ্ছে। এই অভিযোগের পর প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত হাইকোর্টের নির্দেশে এই মামলার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সিবিআই তদন্তের পর সাব-ইন্সপেক্টর রত্না সরকার ও হোমগার্ড দীপঙ্কর দেবনাথকে গ্রেফতার করেছিল।