বিহার বিধানসভা নির্বাচনের ঢাকে কাঠি পড়তে আর মাত্র এক মাস বাকি। আর ভোট যত ঘনিয়ে আসছে, ততই যেন কল্পতরু রূপে ধরা দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন সরকারি কর্মীদের বেতন ও ভাতা দ্বিগুণ করার একগুচ্ছ ঘোষণা করে তিনি কার্যত ভোটের বাদ্যি বাজিয়ে দিয়েছেন। সর্বশেষ ঘোষণায় মিড ডে মিল রাঁধুনি, স্কুলের নিরাপত্তারক্ষী এবং ফিজিক্যাল ইনস্ট্রাকটরদের বেতন এক ধাক্কায় দ্বিগুণ করে দেওয়া হয়েছে।
বিহার সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, মিড ডে মিল রাঁধুনিরা আগে ১৬৫০ টাকা বেতন পেতেন, যা এখন বেড়ে ৩৩০০ টাকা করা হয়েছে। একইসঙ্গে, স্কুলের নৈশপ্রহরী বা নাইট ওয়াচম্যানদের বেতনও ৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করা হয়েছে। ফিজিক্যাল এডুকেশন ও হেলথ ইনস্ট্রাকটরদের বেতনও ৮ হাজার থেকে বেড়ে ১৬ হাজার টাকা করার ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি, তাদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধিও ২০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০০ টাকা করার কথা জানানো হয়েছে।
শুধুমাত্র এই ঘোষণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেননি নীতীশ কুমার। গতকালই তিনি আশাকর্মী ও মমতা কর্মীদের সাম্মানিক ভাতাও বাড়ানোর ঘোষণা করেছিলেন। আশাকর্মীদের বেতন ১০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০০ টাকা করা হয়েছে, যা তাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। মমতা কর্মীদের প্রতি ডেলিভারি পিছু ভাতা ৩০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০০ টাকা করা হয়েছে, যা তাদের কাজের গুরুত্বের প্রতি সরকারের স্বীকৃতির প্রমাণ।
এর আগে গত শনিবার মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার অবসরপ্রাপ্ত সাংবাদিকদের পেনশন বাড়ানোরও ঘোষণা করেন। আগে অবসরপ্রাপ্ত সাংবাদিকরা মাসিক ৬০০০ টাকা পেনশন পেতেন, যা এক লাফে ১৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। এছাড়া, কোনও পেনশনভোগী সাংবাদিক মারা গেলে তাঁর স্ত্রী আজীবন মাসিক ১০,০০০ টাকা করে পেনশন পাবেন বলে জানানো হয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে এই পেনশন প্রকল্প চালু করেছিল বিহার সরকার।
বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক মুখে এই দফায় দফায় বেতন ও ভাতা বৃদ্ধির ঘোষণা নিঃসন্দেহে কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং নীতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন জেডি(ইউ)-বিজেপি জোটের জন্য এটি একটি বড় নির্বাচনী চাল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপগুলি ভোটারদের মন জয় করে আসন্ন নির্বাচনে দলের অনুকূলে একটি জনমত তৈরিতে সহায়তা করতে পারে।