আগামী নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকাকে ১০০ শতাংশ ত্রুটিমুক্ত ও স্বচ্ছ করতে এবার কোমর বেঁধে নামছে নির্বাচন কমিশন। সেই লক্ষ্যেই শনিবার থেকে রাজ্যজুড়ে শুরু হতে চলেছে এসআইআর (SIR)-এর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শুনানি পর্ব। ইতিমধ্যেই বহু ভোটারের নথি সংগ্রহের কাজ শেষ হয়েছে। এখন সেই নথি যাচাই এবং শুনানির মাধ্যমেই স্থির হবে, চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় কার নাম থাকবে আর কার নাম স্থায়ীভাবে বাদ পড়বে।
প্রথম দফায় ডাক পাবেন কারা? কমিশন সূত্রে খবর, প্রথম পর্যায়ের শুনানিতে মূলত তাঁদেরই ডাকা হচ্ছে যাঁদের তথ্যে বড়সড় গরমিল রয়েছে। তালিকায় রয়েছেন:
যাঁরা বিএলও (BLO)-দের কাছে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নথি জমা দেননি।
যাঁরা ইনিউমারেশন ফর্ম সঠিকভাবে পূরণ করেননি।
যাঁদের নিজের বা আত্মীয়ের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নেই।
যাঁদের নাম কমিশনের নজরে ‘সন্দেহজনক’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, নাম-পদবির সামান্য ভুল বা ছোটখাটো নথিগত সমস্যা বিএলও স্তরেই মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে যেখানে তথ্যের ব্যাপক অসঙ্গতি রয়েছে, সেখানে সশরীরে হাজিরা দিয়ে শুনানি পর্ব পার করতে হবে।
দ্বি-স্তরীয় যাচাই প্রক্রিয়া ও মাইক্রো অবজার্ভার: ভোটার তালিকা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে এবার নজিরবিহীন কড়াকড়ি করা হচ্ছে। জমা পড়া প্রতিটি নথি দু’বার করে খতিয়ে দেখা হবে। প্রথমে ইআরও (ERO) এবং তারপর মাইক্রো অবজার্ভাররা সেই নথি পরীক্ষা করবেন। বুধবারই প্রায় ৪,৬০০ মাইক্রো অবজার্ভারকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে ৯-দফা নির্দেশিকা জারি করেছে কমিশন। তাঁদের দায়িত্ব হবে অ্যাপের মাধ্যমে জমা পড়া তথ্যের সঙ্গে জন্ম-মৃত্যুর নথি ও অন্যান্য সরকারি নথির মিল খুঁজে বের করা।
রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনি আধিকারিকের (CEO) নির্দেশ অনুযায়ী, কোনও বৈধ ভোটার যেন তালিকা থেকে বাদ না পড়েন এবং কোনও অযোগ্য ব্যক্তি যেন ভুয়ো নথি দিয়ে তালিকায় জায়গা না পান, তা নিশ্চিত করতে হবে। শুনানির এই প্রক্রিয়ার ওপর পর্যবেক্ষক ও বিশেষ পর্যবেক্ষকরা কড়া নজর রাখবেন। এই এসআইআর শুনানির ফলাফলের ওপরই নির্ভর করছে লক্ষ লক্ষ মানুষের ভোটাধিকার। তাই তালিকায় নাম নিশ্চিত করতে সাধারণ মানুষকেও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছে কমিশন।