ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটারের উপস্থিতি নিয়ে রাজ্য ও জাতীয় নির্বাচন কমিশনের মধ্যে সংঘাত চরমে উঠেছে। সম্প্রতি ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটারের অস্তিত্ব মেলার ঘটনায় ৪ জন সরকারি আধিকারিককে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। কিন্তু রাজ্যের তরফে সেই নির্দেশ মানা হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় রাজ্য-কমিশনের টানাপোড়েন নতুন মাত্রা পেয়েছে।
কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজটি সারা বছর ধরে চলতে থাকে এবং এর সঙ্গে নির্বাচনের সরাসরি কোনও সম্পর্ক নেই। যখনই ভোটার তালিকা সংযোজন বা সংশোধনের কাজ চলে, তখন এটি সম্পূর্ণভাবে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকে। সংবিধানের ৩২৪ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ভোটার তালিকা তৈরি এবং নির্বাচন পরিচালনা করার ক্ষমতা কমিশনের হাতে রয়েছে। এই কাজে প্রয়োজনীয় লোকবল সরবরাহ করতে রাজ্য বাধ্য এবং মুখ্য সচিবকেও এর জন্য জবাবদিহি করতে হয়। কমিশন এও স্পষ্ট করেছে যে, নির্বাচনের ঘোষণা না হলেও তাদের ক্ষমতা অক্ষুণ্ণ থাকে এবং কমিশন ও ইআরও-এর মাঝে অন্য কোনও কর্তৃপক্ষ নেই।
এদিকে, এই ঘটনার জেরে ভোটার কার্ড বিতরণের নিয়মেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। এতদিন ধরে ভোটার কার্ড বা এপিক কার্ড বিভিন্ন স্তরের সরকারি আধিকারিকদের মাধ্যমে ভোটারের বাড়িতে পৌঁছাতো। কিন্তু ভুয়ো ভোটারের ঘটনা সামনে আসার পর, রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর এই নিয়মে পরিবর্তন এনেছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ভোটার কার্ড ছাপার পর সরাসরি ডাক বিভাগের কেন্দ্রীয় অফিস অর্থাৎ জিপিও থেকে স্পিড পোস্টে ভোটারের বাড়িতে পাঠানো হবে। আগামী ১লা সেপ্টেম্বর থেকে এই নতুন নিয়ম কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।
এই পদক্ষেপগুলি ভুয়ো ভোটারদের সমস্যা মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ হলেও, রাজ্য ও নির্বাচন কমিশনের মধ্যেকার এই বিরোধ রাজনৈতিক মহলে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, এই টানাপোড়েন ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজে কতটা প্রভাব ফেলবে।