ভোটার তালিকায় নাম নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়ায় গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মোট চার জন আধিকারিককে সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে FIR দায়েরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার কমিশন রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে এই নির্দেশ পাঠায়।
জানা গেছে, অনিয়মটি ঘটেছে বারুইপুর পূর্ব এবং পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না বিধানসভা কেন্দ্রে। তদন্তে কমিশন দেখতে পায় যে, ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ERO) এবং সহকারী ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (AERO) হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকরা নিজেদের গোপনীয় আইডি ডেটা এন্ট্রি অপারেটরদের দিয়ে দিতেন। অপারেটররা সেই আইডি ব্যবহার করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে নতুন ভোটারের নাম নথিভুক্ত করত। অথচ, শুধুমাত্র এসডিও বা ডব্লিউবিসিএস স্তরের আধিকারিকরাই ইআরও হিসেবে কাজ করার জন্য যোগ্য।
বারুইপুর পূর্বে এই কাজে দায়িত্বে ছিলেন দেবোত্তম দত্ত চৌধুরী এবং তথাগত মণ্ডল। ময়না বিধানসভা কেন্দ্রে ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার ও সহকারী ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন বিপ্লব সরকার ও সুদীপ্ত দাস। এই চার জনের বিরুদ্ধেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, সুরজিৎ হালদার নামে এক ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের বিরুদ্ধেও FIR দায়েরের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
কমিশন মুখ্যসচিবকে লেখা চিঠিতে ১৯৫০ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের উল্লেখ করে আইনি পদক্ষেপ করার কথা বলেছে। এই আইনে অপরাধ প্রমাণিত হলে তিন মাস থেকে দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। উল্লেখ্য, এই অনিয়মের অভিযোগটি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী উত্থাপন করলে কমিশন তদন্ত শুরু করে।
এই পদক্ষেপের ফলে ভোটার তালিকা তৈরির কাজে স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য নির্বাচন কমিশনের দৃঢ় মনোভাব স্পষ্ট হয়েছে।