“ভুলবশত ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া হবে না”-SIR প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে নির্বাচন কমিশন

বিহারে চলমান ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি হলফনামা দাখিল করেছে নির্বাচন কমিশন। ভোটার তালিকা থেকে ৬৫ লক্ষ নাম ভুলভাবে বাদ দেওয়ার অভিযোগের জবাবে কমিশন আদালতকে আশ্বস্ত করেছে যে, কোনো যোগ্য ভোটারের নাম পূর্ব নোটিশ, শুনানির সুযোগ অথবা যথাযথ আদেশ ছাড়া তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে না। আগামী ১৩ আগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি হওয়ার কথা।

অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (ADR)-এর পক্ষ থেকে একটি আবেদন দাখিল করে অভিযোগ করা হয়েছিল যে বিহারে প্রায় ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম ভুল করে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে এবং তাদের তালিকাও স্বচ্ছভাবে প্রকাশ করা হয়নি। এর প্রেক্ষিতে, সুপ্রিম কোর্ট গত ৬ আগস্ট নির্বাচন কমিশনকে একটি হলফনামা দাখিল করে এই বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেয়।

নির্বাচন কমিশন তাদের হলফনামায় জানিয়েছে যে, ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রথম ধাপ সম্পূর্ণ হয়েছে এবং ১ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় বুথ স্তরের আধিকারিকরা (BLO) বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের নাম এবং ফর্ম সংগ্রহ করেছেন। কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিহারে মোট ৭.৮৯ কোটি ভোটারের মধ্যে ৭.২৪ কোটি মানুষ তাদের নাম নিশ্চিত করার জন্য নথি জমা দিয়েছেন।

ভোটার যাচাইকরণ প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত ব্যাপক ছিল। এই কাজে ৩৮ জন জেলা নির্বাচন আধিকারিক, ২৪৩ জন নির্বাচন রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তা, ৭৭,৮৯৫ জন বিএলও, ২.৪৫ লক্ষ স্বেচ্ছাসেবক এবং ১.৬০ লক্ষ বুথ স্তরের এজেন্ট সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন। এছাড়াও, রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়মিত বাদ পড়া ভোটারদের তালিকা সরবরাহ করা হয়েছিল। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ২৪৬টি হিন্দি সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন, অনলাইন-অফলাইন ফর্মের সুবিধা, নগর সংস্থাগুলিতে বিশেষ শিবির, যুবকদের জন্য অগ্রিম রেজিস্ট্রেশন এবং প্রবীণ নাগরিক ও প্রতিবন্ধীদের সহায়তার জন্য ২.৫ লক্ষ স্বেচ্ছাসেবকও মোতায়েন করা হয়েছিল।

কমিশন আরও জানিয়েছে যে কোনো ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার আগে অবশ্যই উপযুক্ত আধিকারিকের নোটিশ, শুনানি এবং একটি যুক্তিসঙ্গত আদেশ বাধ্যতামূলক। ১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ পর্যন্ত দাবি এবং আপত্তি জানানোর সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে জমা পড়া সমস্ত দাবি সাত কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা হবে। আপিলের ব্যবস্থা হিসেবে প্রথমে ERO এবং তারপর মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে আবেদন করার সুযোগ থাকবে। নির্বাচন কমিশন প্রতিদিন প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জনগণকে এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত করছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy