ওপার বাংলায় চরম অশান্তি এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অবনতির সরাসরি প্রভাব পড়ল স্বাস্থ্য পরিষেবায়। শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা এবং পাল্টা ভিসা পরিষেবা স্থগিত হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন কয়েক লক্ষ বাংলাদেশি রোগী। দিল্লি, আগরতলা ও শিলিগুড়িতে বাংলাদেশ হাইকমিশন তাদের ভিসা অফিস বন্ধ করে দেওয়ায় উন্নত চিকিৎসার আশায় ভারতে আসার পথ কার্যত রুদ্ধ।
পরিসংখ্যান বলছে, ভারতের ‘মেডিক্যাল ট্যুরিজম’-এর সিংহভাগই নির্ভরশীল বাংলাদেশের ওপর। ২০২৪ সালে ভারতে চিকিৎসা করাতে আসা ৬.৪৪ লক্ষ বিদেশির মধ্যে ৪.৮২ লক্ষই ছিলেন বাংলাদেশি। বিশেষ করে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালগুলি এই রোগীদের ওপর বড়ভাবে নির্ভরশীল। কিন্তু বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভিসা না মেলায় প্রাণ সংশয় দেখা দিয়েছে বহু মুমূর্ষু রোগীর।
বাংলাদেশের নিজস্ব স্বাস্থ্য ব্যবস্থার চিত্রটিও অত্যন্ত করুণ। ১৬ কোটির বেশি জনসংখ্যার দেশে প্রতি ১০০০ মানুষের জন্য চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ০.৫৩ জন। সরকারি হাসপাতালে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখানোর জন্য রোগীকে ৯০ মিনিট অপেক্ষা করতে হলেও পরামর্শ মেলে মাত্র এক মিনিট। নার্স ও টেকনিক্যাল স্টাফের অভাব এবং দুর্নীতির কারণে ৭০ শতাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই নূন্যতম পরিষেবা অমিল। এই অবস্থায় ভারতের দরজা বন্ধ হয়ে যাওয়া মানে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর সমান।