স্ত্রী জীবিত থাকা সত্ত্বেও তাঁর শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করলেন স্বামী। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের উত্তর মামুদপুর গ্রামে। প্রাক্তন সেনাকর্মী নরেন নায়েক তাঁর স্ত্রীকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু দাম্পত্য জীবনে সমস্যার পর সেই স্ত্রীকে তিনি সামাজিক ও ধর্মীয় রীতি মেনে মৃত বলে ঘোষণা করে শ্রাদ্ধ করেন।
তিন বছর আগে ধলতিথা এলাকার ৩৩ বছর বয়সী সুমিতা সরকারের সঙ্গে নরেন নায়েকের আলাপ হয়। অল্পদিনের মধ্যেই তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং তাঁরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর তাঁদের সংসার বেশ সুখেই চলছিল। কিন্তু কিছুদিন পর থেকেই তাঁদের সম্পর্কে ফাটল ধরতে শুরু করে। নরেনবাবুর অভিযোগ, তাঁর স্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন পুরুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন, যা ধীরে ধীরে গভীর সম্পর্কে পরিণত হয়। হঠাৎ একদিন সুমিতা নিখোঁজ হয়ে যান। খোঁজখবর নিয়ে নরেন জানতে পারেন, সুমিতা তাঁকে ছেড়ে অন্য জায়গায় সংসার পেতেছেন।
স্ত্রীর এই বিশ্বাসঘাতকতা নরেনবাবু মেনে নিতে পারেননি। তাই তিনি সম্পর্কের ইতি টানতে এক অদ্ভুত পন্থা বেছে নেন। তিনি পুরোহিত ডেকে সমস্ত ধর্মীয় নিয়ম মেনে স্ত্রীর শ্রাদ্ধের আয়োজন করেন। তিনি স্ত্রীর ছবিতে মালা দেন, ছবিটি পুড়িয়ে দেন, এবং মাথা ন্যাড়া করে যজ্ঞ ও পিণ্ডদান সম্পন্ন করেন। নরেনবাবু বলেন, “আমার কাছে স্ত্রী মৃত। যিনি একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে আমাকে ছেড়ে অন্য কোথাও ঘর বেঁধেছেন, তার সঙ্গে আর কোনো সম্পর্ক রাখতে চাই না। তাই ধর্মমতে তাকে বিদায় জানালাম।”
এই অস্বাভাবিক ঘটনাটি এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। কেউ কেউ এই ঘটনাকে নজিরবিহীন বলছেন, আবার কেউ বলছেন ভালোবাসার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা হলে এমন প্রতিক্রিয়া স্বাভাবিক। তবে এই ঘটনাটি স্বাভাবিকভাবেই আলোচনার জন্ম দিয়েছে।