বালুরঘাটের মঙ্গলপুর এলাকার ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কাছে ছেলেধরা সন্দেহে এক মহিলাকে মারধর করে গ্রিলে বেঁধে রাখার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার বিকেলে এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। খবর পেয়ে বালুরঘাট থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই মহিলাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ওই মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন। তার কাছ থেকে পাওয়া পরিচয়পত্র অনুযায়ী, মহিলার নাম রীতা প্রামাণিক এবং তার বাড়ি বালুরঘাট শহরের উত্তর চকভবানি এলাকায়। পুলিশ এই মুহূর্তে তার মানসিক স্থিতিশীলতা যাচাই করে দেখছে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের অন্তর্গত ছাত্রাবাসে। এই ছাত্রাবাসে জেলার বহু শিশু থেকে পড়াশোনা করে। রবিবার বিকেলে ওই মহিলা ছাত্রাবাসে প্রবেশ করেন এবং বিভিন্ন শিশুকে নিজের সন্তান বলে হাত ধরে টানাটানি শুরু করেন। ঘটনার সময় বেশ কিছু শিশুর পরিবারের সদস্যরা তাদের সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে আশ্রমে গিয়েছিলেন। সেখানেই তারা ওই মহিলাকে শিশুদের হাত ধরে টানাটানি করতে দেখে তাকে ছেলেধরা সন্দেহ করেন।
এরপরই উত্তেজিত জনতা ওই মহিলাকে মারধর করে এবং আশ্রমের গ্রিলের সঙ্গে বেঁধে রাখে। জনরোষ থেকে বাঁচিয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং মহিলাকে উদ্ধার করে বালুরঘাট থানায় নিয়ে আসে।
এ বিষয়ে ডিএসপি হেডকোয়ার্টার বিক্রম প্রসাদ বলেন, “ওই মহিলাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে। পুরো বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।”
এই ঘটনা আবারও ‘ছেলেধরা’ গুজব এবং গণপিটুনির মতো সামাজিক সমস্যাকে সামনে নিয়ে এলো। স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশ এই ধরনের গুজবে কান না দেওয়ার জন্য এবং আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার জন্য জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। মানসিক ভারসাম্যহীনতার বিষয়টি নিশ্চিত হলে, মহিলার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানা গেছে। পুরো ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত চলছে।