ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে রেকর্ড অনুপ্রবেশের চেষ্টা! গত এক বছরে ১০,২৬৩ বাংলাদেশিকে আটক করল বিএসএফ

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ নতুন ঘটনা না হলেও, সাম্প্রতিক বছরের পরিসংখ্যান উদ্বেগজনক। বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (BSF) পূর্ব কমান্ডের সর্বশেষ বার্ষিক তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে সীমান্ত অবৈধভাবে পেরোনোর চেষ্টা করার সময় মোট ১০,২৬৩ জন বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছে। বিএসএফ জানিয়েছে, সীমান্তে নজরদারি জোরদার করা এবং বাড়তি সংখ্যায় জওয়ান মোতায়েনের ফলেই এত বিপুল সংখ্যক অনুপ্রবেশকারীকে আটক করা সম্ভব হয়েছে।

রাজনৈতিক অস্থিরতায় অনুপ্রবেশের ঢেউ:

বিএসএফ (Border Security Force) জানিয়েছে, গত বছর বিশেষ করে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাওয়ার সময় সীমান্তে অনুপ্রবেশের চেষ্টা বেড়ে গিয়েছিল। এই ‘তখ্‍তাপলটের’ পরিস্থিতিতে হাজার হাজার মানুষ ভারতের ভূখণ্ডে ঢোকার চেষ্টা করেছিল। তবে পূর্ব কমান্ডের জওয়ানরা দিন-রাত এক করে সীমান্তে কড়া নজরদারি চালিয়ে সেই সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন।

নিরাপত্তা বাহিনীর মতে, স্থলভাগে বাড়তি জওয়ান মোতায়েনের পাশাপাশি আধুনিক নজরদারি প্রযুক্তি ব্যবহার করায় নজরদারির দক্ষতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতেও জওয়ানরা ঠান্ডা মাথায় দায়িত্ব পালন করেছেন এবং নজিরবিহীন পেশাদারি দেখিয়েছেন, যা বৃহৎ অনুপ্রবেশের ঢেউকে প্রতিহত করেছে।

বিশাল অঙ্কের পাচার চক্র নস্যাৎ:

বিএসএফ পূর্ব কমান্ড তাদের বার্ষিক পর্যালোচনা রিপোর্টে অনুপ্রবেশ রোধের পাশাপাশি গত বছরের বড়সড় পাচারকারী জিনিস উদ্ধারের তথ্যও প্রকাশ করেছে, যা বাহিনীর শক্তিশালী অবস্থানকে প্রমাণ করে:

মাদকদ্রব্য: ৩৭৬.৫২ কোটি টাকা মূল্যের মাদকদ্রব্য।

অন্যান্য নিষিদ্ধ সামগ্রী: ১৭০.৫৭ কোটি টাকার বিভিন্ন নিষিদ্ধ সামগ্রী।

সোনা: ৬৭.৪২ কোটি টাকা মূল্যের ৫১.৩৮৯ কেজি সোনা।

বিএসএফের দাবি, সীমান্তে বাড়তি সতর্কতা, দক্ষতা এবং প্রযুক্তিগত নজরদারির জন্যই পূর্ব কমান্ড গত বছরে শুধু অনুপ্রবেশ প্রতিরোধেই নয়, বহু পাচার চক্রকেও নস্যাৎ করতে সক্ষম হয়েছে। সীমান্তের উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশে জওয়ানদের এই কাজ দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মহল।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy