ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ থামানোর কৃতিত্ব বারবার দাবি করে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার জেরুজালেমের নেসেটে (ইসরায়েলের পার্লামেন্ট) দাঁড়িয়ে তিনি আরও একবার ঘোষণা করলেন, তাঁর মধ্যস্থতাতেই দুই দেশের যুদ্ধ থেমেছে। তবে এই ইস্যুতে ট্রাম্পের বারবার দাবি সত্ত্বেও তাঁর ‘বন্ধু’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নীরবতা রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
বিরোধীরা এই নিয়ে যতই সুর চড়াক না কেন, ট্রাম্পের এই ‘দাবী’ যেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কর্ণকুহরে প্রবেশই করছে না।
নেসেটে ট্রাম্পের নতুন ঘোষণা
সোমবার গাজা শান্তি চুক্তি নিয়ে ভাষণে ট্রাম্প বলেন, ভারত ও পাকিস্তান সহ বেশ কয়েকটি দেশে যুক্তরাষ্ট্র ‘শান্তির সেতু’ নির্মাণ করবে।
তিনি বলেন, “আমরা তেল আভিভকে দুবাই, ইজরায়েলকে মিশর, সৌদি আরবকে কাতার, ভারতকে পাকিস্তান, তুরস্ককে জর্ডান… এর সাথে সংযুক্ত করব। আমি আরও একটি যুদ্ধের মীমাংসা করলাম।” ট্রাম্পের এই ‘আরও একটি যুদ্ধের মীমাংসা’ বলার মাধ্যমে ভারত-পাক সংঘর্ষ থামানোর কৃতিত্বকেই ফের দাবি করলেন।
মোদী মুখ খুললেন, তবে গাজা নিয়ে!
ট্রাম্পের এই দাবি নিয়ে মোদী মুখ না খুললেও, এদিন তিনি গাজা শান্তি চুক্তির জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এক্স (টুইটার)-এ মোদী লেখেন:
“দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্দী থাকার পর সকল ইজরায়েলি বন্দীর মুক্তিকে আমরা স্বাগত জানাই। তাদের মুক্তি তাদের পরিবারের সাহস, রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের অটল শান্তি প্রচেষ্টা এবং প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর দৃঢ় সংকল্পের প্রতি আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি। আমরা এই অঞ্চলে (মধ্যপ্রাচ্যে) শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের আন্তরিক প্রচেষ্টাকে সমর্থন করি।”
পর্যবেক্ষকদের মতে, গাজা ইস্যুতে ট্রাম্পকে সমর্থন জানালেও ভারত-পাক সংঘর্ষের ক্ষেত্রে তাঁর দাবি নিয়ে মোদীর নীরব থাকা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
ভারত-পাক সংঘর্ষের আসল চিত্র
প্রসঙ্গত, গত ৭ মে পাকিস্তানি জঙ্গি ঘাঁটিতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ হামলার পর ভারত ও পাকিস্তান সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছিল। এই হামলা ছিল ২২ এপ্রিল পহেলগামের সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ। ভারতের বিদেশ সচিবের তরফে জানানো হয়েছিল, ৪ দিন ব্যাপী সংঘাতের পর পাকিস্তানের সামরিক অভিযানের মহাপরিচালক (ডিজিএমও) যুদ্ধবিরতি বন্ধের অনুরোধ করার পরেই ভারত তাতে সম্মতি দেয়। কিন্তু ১০ মে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকেই ট্রাম্প ঘোষণা করেন যে, তিনিই মধ্যস্থতা করে দুই দেশের যুদ্ধ থামিয়েছেন।