ভারতীয় নৌসেনার শক্তি আরও বাড়াতে চলেছে ভারত। বিধ্বংসী এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে নির্মিত দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী যুদ্ধজাহাজ তৈরির কাজ শুরু হতে চলেছে। প্রজেক্ট ১৮ ডেস্ট্রয়ার নামে পরিচিত এই যুদ্ধজাহাজটি বিশ্বের সেরা ডেস্ট্রয়ারগুলির সমতুল্য বা তার থেকেও বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে ভারত মহাসাগর এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ব্লু-ওয়াটার নেভাল শক্তি হিসেবে ভারতের অবস্থান আরও মজবুত হবে।
বিধ্বংসী ক্ষমতা:
এই ডেস্ট্রয়ারটি একই সঙ্গে ১৪৪টি ছোট, মাঝারি ও বড় পাল্লার মিসাইল বহন ও ব্যবহার করতে সক্ষম হবে। ব্রহ্মোস থেকে শুরু করে লং রেঞ্জ স্যাম (LR-SAM), এমনকি শত্রুপক্ষের সাবমেরিন ধ্বংস করার জন্য অ্যান্টি-সাবমেরিন মিসাইল বহনের ক্ষমতাও এতে থাকবে।
অত্যাধুনিক প্রযুক্তি:
এই যুদ্ধজাহাজটি অত্যাধুনিক গ্যালিয়াম নাইট্রাইড (GaN) এ-ইএসএ রাডার দিয়ে সজ্জিত হবে, যা ৫০০ কিলোমিটার দূর থেকেও নিখুঁতভাবে লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করতে পারবে। এর ডিজাইন সম্পূর্ণ স্টেলথ প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে, যার ফলে এটি শত্রুপক্ষের রাডারে সহজে ধরা পড়বে না। জাহাজটিতে শক্তিশালী সেন্সর সিস্টেম এবং ক্লোজ-ইন ওয়েপন সিস্টেম (CIWS) থাকবে, যা কাছ থেকে শত্রুর যেকোনো হামলা মোকাবিলা করতে পারবে।
বৈশিষ্ট্য:
প্রজেক্ট ১৮ ডেস্ট্রয়ারের ওজন হবে প্রায় ১৩ হাজার টন। এতে ইলেকট্রিক প্রপালশন সিস্টেম থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, যা জাহাজটির শব্দ কমাবে এবং গতি অনেক বাড়িয়ে দেবে। এছাড়াও, ডেক-ভিত্তিক হেলিকপ্টার ওঠানামার ব্যবস্থা থাকবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই জাহাজটি চিনের Type 055 এবং আমেরিকার Zumwalt শ্রেণির যুদ্ধজাহাজের সঙ্গে পাল্লা দিতে সক্ষম হবে।
উত্পাদন ও সময়সীমা:
সূত্রের খবর অনুযায়ী, এই যুদ্ধজাহাজটির উৎপাদন কাজ মাজাগাঁও ডক অথবা কোচিন শিপইয়ার্ডে ২০২৬-২৭ সাল নাগাদ শুরু হতে পারে। সবকিছু ঠিকঠাক চললে ২০৩০ সালের মধ্যে এটি ভারতীয় নৌসেনার হাতে চলে আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এই নতুন যুদ্ধজাহাজ ভারতের প্রতিরক্ষাক্ষেত্রে একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে।