রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি অব্যাহত রাখায় ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আজ, ১লা অগস্ট থেকেই এই নতুন শুল্ক কার্যকর হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই নির্বাহী নির্দেশিকার ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় পণ্য রপ্তানি এখন থেকে আরও ব্যয়বহুল হবে, যা ভারতের রপ্তানি খাতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মার্কিন সেক্রেটারি অফ স্টেট মার্কো রুবিও এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বিরক্তি প্রকাশ করছেন… ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে পণ্য ক্রয় অব্যাহত রেখেছে, যা যুদ্ধের জন্য অর্থায়নে সহায়তা করছে।’ যদিও তিনি ভারতকে ‘স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার’ বা কৌশলগত অংশীদার বলেও দাবি করেন। যুক্তরাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা এবং সে কারণেই তারা চাইছে ভারত যেন রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি না করে। ভারতকে এই বিষয়ে চাপ দিতেই ট্রাম্প প্রশাসন এই ‘পেনাল্টি’ বা জরিমানা ঘোষণা করেছে।
এর আগে চলতি বছরের ২ এপ্রিল ট্রাম্প ভারতের ওপর ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা করলেও, পরে তা পিছিয়ে ৯ জুলাই পর্যন্ত করা হয়েছিল। পরবর্তীতে সেই ছাড় ১লা অগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়, যা এখন কার্যকর হচ্ছে।
এই শুল্ক আরোপের ঘোষণা এমন এক সময়ে এলো যখন ভারত-মার্কিন বাণিজ্য আলোচনা জারি রয়েছে। পূর্বে দুই দেশ সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে চুক্তির প্রথম ধাপ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। তবে বর্তমানে জানা যাচ্ছে, বাণিজ্য আলোচনা অনেক স্তরে আটকে আছে এবং দুই দেশের মধ্যে পাঁচ দফা বৈঠক হলেও সর্বশেষ ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত আলোচনাও অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
আগামী ২৫শে অগস্ট থেকে ভারতে ষষ্ঠ দফার বাণিজ্য বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সূত্র অনুযায়ী, অনেক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে এখনও কোনো সমঝোতা হয়নি। যদিও এর আগে দুই দেশ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে এই বাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে পারস্পরিক বাণিজ্যের পরিমাণ ৫০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা হবে। এই শুল্কারোপের পর সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। রাশিয়া থেকে তেল আমদানি ইস্যুতে এই সংঘাত ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে কোন দিকে নিয়ে যায়, এখন সেটাই দেখার বিষয়।