নিজেদের সামরিক শক্তি আরও বাড়াতে চলেছে ভারত। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সম্প্রতি সেনা বাহিনীর জন্য উন্নত মানের ড্রোন এবং ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র কেনার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে। এই অস্ত্র কেনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মোট ৬৭ হাজার কোটি টাকার প্রাথমিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের নেতৃত্বে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ক্রয় সংক্রান্ত সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কমিটির একটি উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ৮৭টি সশস্ত্র ড্রোন কেনা হবে। এই ড্রোনগুলি বিদেশি কোম্পানির সহযোগিতায় একটি ভারতীয় প্রতিরক্ষা সংস্থা তৈরি করবে, যেখানে ৬০ শতাংশ উপকরণ দেশীয় হবে। এই মাঝারি পাল্লার, দীর্ঘ সহনশীলতাসম্পন্ন ড্রোনগুলি ভারতের সামরিক বাহিনীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আধুনিক যুদ্ধ বা সংঘর্ষে ড্রোন এখন অপরিহার্য ভূমিকা পালন করছে। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সময় ভারতীয় তিন সেনাবাহিনী সশস্ত্র ড্রোনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিল। সশস্ত্র বাহিনীর আশা, নতুন ‘ম্যাল ড্রোন’ আরও উন্নত মানের হবে, যা শত্রুর ঘাঁটিতে হামলা করে নিরাপদে ফিরে আসতে সক্ষম হবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই ২৭টি ড্রোন কিনতে ভারতের প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। এছাড়া, পরবর্তী দশ বছরের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আরও ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করতে হবে।
ড্রোনের পাশাপাশি, বিশ্বের দ্রুততম ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর অন্যতম ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রও কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভারত এখন অতিরিক্ত ১১০টি ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র নিজেদের অস্ত্র ভান্ডারে যুক্ত করবে। রাশিয়া এবং ভারতের যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রটি যুদ্ধজাহাজ, ডুবোজাহাজ, যুদ্ধবিমান এবং স্থলবাহিনীর লঞ্চার থেকে নিক্ষেপ করা যায়। এই ক্ষেপণাস্ত্রের নকশায় দেশের প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও এবং মস্কোর একটি প্রতিরক্ষা গবেষণা কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই নতুন ক্ষেপণাস্ত্রগুলি ভারতীয় সেনার আক্রমণাত্মক ক্ষমতাকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে।