বৃহস্পতিবার রাতে আততায়ীদের গুলিতে বিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়লেন ভাঙড়ের শওকত-ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা রাজ্জাক সর্দার। এই মর্মান্তিক ঘটনায় তাঁর পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া, আর ভাঙড়ের রাজনীতিতে নতুন করে দানা বেঁধেছে তীব্র উত্তেজনা ও চাপানউতোর। কে দায়ী এই হত্যাকাণ্ডের জন্য – শাসক দল তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল, নাকি বিরোধী আইএসএফ? প্রশ্ন এটাই।
পরিবারের আকুতি: ন্যায়বিচারের দাবি
রাজ্জাক সর্দারের আকস্মিক মৃত্যুতে তাঁর পরিবার কান্নায় ভেঙে পড়েছে। স্বজনহারা পরিবারটি এই মুহূর্তে স্পষ্ট করে কাউকে দায়ী না করলেও, তাদের একটাই দাবি – দ্রুত দোষীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। তারা পুলিশের কাছে সুবিচারের প্রত্যাশায় পথ চেয়ে রয়েছে। পরিবারের সদস্যরা হতবাক, কেন এমন নৃশংসভাবে তাদের প্রিয়জনকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো।
বিধায়ক শওকত মোল্লার সরাসরি অভিযোগ আইএসএফের দিকে
ভাঙড়ের বিধায়ক শওকত মোল্লা এই হত্যাকাণ্ডের জন্য সরাসরি আইএসএফকে দায়ী করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরেই রাজ্জাক সর্দারকে খুন করা হয়েছে। শওকত মোল্লার এই অভিযোগ ভাঙড়ের রাজনৈতিক উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আইএসএফের বিরুদ্ধে এর আগেও ভাঙড়ে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে, এবং এই ঘটনা সেই পুরনো অভিযোগকে নতুন করে সামনে এনেছে।
তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নাকি বিরোধী দলের চক্রান্ত?
তবে, রাজনৈতিক মহলের একাংশ এই ঘটনার পেছনে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না। গত কয়েক বছর ধরে ভাঙড়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উঠেছে বারবার। ফলে রাজ্জাক সর্দারের মৃত্যু কি নিছকই বিরোধী দলের চক্রান্ত, নাকি শাসক দলের ভেতরের বিবাদের ফল – তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
এই হত্যাকাণ্ড ভাঙড়ে নতুন করে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করেছে। পুলিশি তদন্তই এখন একমাত্র ভরসা, যা এই রহস্যের জট খুলতে পারে। তবে, যতক্ষণ না আসল সত্য সামনে আসছে, ততক্ষণ পর্যন্ত রাজ্জাক সর্দারের পরিবার এবং গোটা ভাঙড় আতঙ্কের আবহে দিন কাটাবে, আর রাজনৈতিক চাপানউতোর অব্যাহত থাকবে।