রিখটার স্কেলে ৬.৯ তীব্রতার এক ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল মধ্য ফিলিপিন্স। রয়টার্সের খবর অনুযায়ী, এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ইতিমধ্যেই ৬৯ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং আহত ১৫০-এরও বেশি। মৃতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ফিলিপিন্স প্রশাসন।
ইউনাইটেড স্টেট জিওলজিক্যাল সার্ভে (USGS) জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল জনপ্রিয় পর্যটনস্থল বোগোর উত্তর-পূর্বে ১৭ কিলোমিটার দূরে। এই সমুদ্রতীরবর্তী শহরে প্রায় ৯০ হাজার মানুষ বসবাস করেন। কেন্দ্রস্থল এই এলাকাতেই হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক হয়েছে; শহর ও গ্রামজুড়ে অসংখ্য বাড়ি ধূলিসাৎ হয়েছে।
বোগোতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি, ধসে চাপা পড়ল ঝুপড়ি
ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বোগো অঞ্চলটি, যেখানে ১৪ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধস নামায় বহু ঝুপড়ি চাপা পড়ে গিয়েছে। এর ফলে উদ্ধারকাজ চালাতে গিয়ে উদ্ধারকারী দলগুলিকে ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আহতদের ভিড়ে হাসপাতালগুলিও ভরে যাওয়ায় পরিষেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
স্যান রিমিজিওতে মৃত কোস্ট গার্ড ও দমকলকর্মী
ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে স্যান রিমিজিও শহরও। এই অঞ্চলে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। প্রশাসন জানিয়েছে, এখানকার মৃতদের মধ্যে ৩ জন কোস্ট গার্ড, ১ জন দমকলকর্মী এবং ১টি শিশুও রয়েছে।
স্যান রিমিজিও শহরের উপ-মেয়র অ্যালফি রেইনেজ সরকারের কাছে জরুরি সাহায্য চেয়েছেন। তিনি বলেন, “আমাদের জল সরবরাহ ব্যবস্থা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের অধিবাসীদের জন্য অবিলম্বে খাবার ও পরিশ্রুত জল প্রয়োজন।”
স্বজন হারানোর কান্না, জোরকদমে উদ্ধারকাজ
বোগোর প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের অভিঘাত এতটাই জোরাল ছিল যে বাড়ি-ঘর থরথর করে কাঁপতে থাকে এবং রাস্তায় ফাটল দেখা দেয়। আতঙ্কিত মানুষজন দ্রুত রাস্তায় নেমে আসেন।
বর্তমানে স্বজন হারানোর কান্নায় ভাসছে গোটা অঞ্চল। অনেকেই এখনও নিখোঁজ। প্রশাসন সমস্ত রকম যন্ত্র ব্যবহার করে জোরকদমে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। প্রশাসনের অনুমান, এখনও বহু মানুষ ভাঙা বাড়ি বা মাটির তলায় চাপা পড়ে রয়েছেন।