‘বেশি আসন পেয়েও নীতীশকে মুখ্যমন্ত্রী করেছিলাম’, জোটের মর্যাদা নিয়ে বিজেপি-র বার্তা, মহাগঠবন্ধনকে তীব্র আক্রমণ শাহের

আসন্ন বিহার নির্বাচনকে ঘিরে এনডিএ জোটে ভাঙন এবং নীতীশ কুমারের নেতৃত্ব নিয়ে যে গুঞ্জন চলছিল, তাতে কার্যত ইতি টানলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বৃহস্পতিবার ইন্ডিয়া টুডে টিভি-কে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন নীতীশ কুমারের নেতৃত্বেই লড়বে এনডিএ। তবে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর।

অমিত শাহ বলেন,

“নীতীশজিই এই নির্বাচনে এনডিএ-র মুখ। তবে এখনই মুখ্যমন্ত্রীপদ নিয়ে জল্পনা অর্থহীন। ফল ঘোষণার পর সব মিত্রদল একত্রে বসে নেতৃত্ব নির্ধারণ করবে।”

‘বিজেপি বেশি আসন পেয়েও আমরা জোটের মর্যাদা রেখেছি’
নীতীশ কুমারের সিনিয়রিটি এবং জোটের প্রতি বিজেপির শ্রদ্ধার বিষয়টিও তুলে ধরেন অমিত শাহ। তিনি জানান, ২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর নীতীশ কুমার নিজেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে প্রস্তাব দিয়েছিলেন—যেহেতু বিজেপি বেশি আসন পেয়েছে, তাই মুখ্যমন্ত্রী হওয়া উচিত বিজেপিরই।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,

“আমরা বরাবরই জোটের মর্যাদা রক্ষা করেছি। নীতীশজির অভিজ্ঞতা ও সিনিয়রিটির প্রতি সম্মান জানিয়েই তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রী করা হয়।”

নীতীশ কুমারের অবস্থান এবং স্বাস্থ্য নিয়ে বার্তা
নীতীশ কুমারের ঘন ঘন রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তন নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষের জবাবে শাহ বলেন, নীতীশ কুমারের পুরো রাজনৈতিক জীবনই কংগ্রেস-বিরোধিতার ভিতের উপর গড়ে উঠেছে। “মাত্র আড়াই বছর কংগ্রেসের সঙ্গে ছিলেন নীতীশ। তাঁর রাজনীতি শুরু হয়েছে ১৯৭৪ সালের জয়প্রকাশ আন্দোলন থেকে, যা শেষ পর্যন্ত ইন্দিরা গান্ধীর জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে জাতীয় আন্দোলনে রূপ নেয়,” মন্তব্য শাহের।

নীতীশ কুমারের স্বাস্থ্য নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগও তিনি উড়িয়ে দেন। শাহ বলেন, “আমি তাঁর সঙ্গে বারবার কথা বলেছি, কখনও এমন কিছু অনুভব করিনি। বয়সজনিত কিছু বিষয় থাকতে পারে, কিন্তু প্রশাসনের দায়িত্ব তিনি ও তাঁর দল দক্ষতার সঙ্গে সামলাচ্ছেন।”

মহাগঠবন্ধন এবং কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ
একই সঙ্গে মহাগঠবন্ধনকে তীব্র আক্রমণ করে অমিত শাহ বলেন,

“বিহারের মানুষ লালু প্রসাদ যাদবের শাসনের দিন দেখেছে। সেই অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি কেউ চায় না, সময় যতই বদলাক না কেন।”

কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে তিনি মন্তব্য করেন, “ছোট দলগুলির প্রতি অবজ্ঞা ও আত্মঅহংকারই কংগ্রেসকে আজ ছোট করে ফেলেছে, বিহার থেকে শুরু করে বাংলা পর্যন্ত সর্বত্র।”

শেষে আত্মবিশ্বাসের সুরে শাহ দাবি করেন, ১৪ নভেম্বর ফল ঘোষণার পর এনডিএ বিহারে আগের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস গড়বে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy