সমস্ত নেতিবাচক প্রচার ও কুৎসাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে রাজ্যের শিল্পের চাকাকে দেশের শীর্ষে নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। বৃহস্পতিবার ১৮ ডিসেম্বর ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে আয়োজিত শিল্প ও বাণিজ্য সম্মেলন থেকে সেই লক্ষ্যেই একগুচ্ছ নতুন প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, গত কয়েক বছরে রাজ্যে বেকারত্বের হার প্রায় ৪০ শতাংশ কমেছে।
চ্যালেঞ্জ থেকে সাফল্য:
মুখ্যমন্ত্রী এদিন স্মৃতিচারণ করে বলেন, “আগে যখন বিদেশে যেতাম, শুনতাম বাংলায় নাকি আর কিছু হবে না। তখনই চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম বাংলাকে উপরে নিয়ে যাওয়ার।” তিনি জানান, ল্যান্ড ব্যাঙ্ক তৈরি, লজিস্টিক হাব এবং শিল্প স্থাপনের জটিল নিয়ম শিথিল করার ফলেই আজ আইটি ও লেদার সেক্টরে বিপুল বিনিয়োগ আসছে। রাজ্যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়টিও তিনি গর্বের সঙ্গে তুলে ধরেন।
বিনিয়োগের নতুন সুযোগ:
সরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের দেওয়া সাইকেল প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী শিল্পপতিদের উদ্দেশে বলেন, “বাইরে থেকে সাইকেল কিনতে অনেক খরচ হয়। রাজ্যে অনেক জমি আছে, কেউ চাইলে এখানে সাইকেল তৈরির ফ্যাক্টরি গড়তে পারেন।” এছাড়া জিএসটি (GST) চালুর ফলে রাজ্যের আর্থিক ক্ষতি হলেও উদ্ভাবনী শক্তির জোরে বাংলা এগিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।
একনজরে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বোধন করা নতুন প্রকল্পসমূহ:
| প্রকল্প | স্থান / বিবরণ | গুরুত্ব |
| সুপার ক্রিটিক্যাল থার্মাল ইউনিট | সাগরদিঘি (৬৬০ মেগাওয়াট) | রাজ্যের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বহুগুণ বাড়বে। |
| নতুন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক | আসানসোল ও বাঁকুড়া | ডাব্লুবিএসআইডিসিএল (WBSIDCL)-এর অধীনে দুটি পার্ক। |
| MSME ফেসিলিয়েশন সেন্টার | ৮টি জেলা (কলকাতা, দার্জিলিং, মালদা ইত্যাদি) | ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রসারে বিশেষ সহায়তা। |
| হরিণঘাটা ডেয়ারি প্ল্যান্ট | খরচ ৬৫.৫৮ কোটি টাকা | প্রতিদিন ১-২ লক্ষ লিটার দুধ উৎপাদন হবে। |
| উৎসধারা প্রকল্প | ব্যারাকপুরের গান্ধীঘাট | পর্যটন ও সৌন্দর্যায়নের নতুন দিগন্ত। |
মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়েছেন, “মস্তিষ্কে শান্তি থাকলে তবেই নতুন চিন্তা বা ইনোভেটিভ আইডিয়া তৈরি হয়।” নেতিবাচক পরিবেশ সরিয়ে সেই শান্তির বাতাবরণেই বাংলাকে আগামী দিনে দেশের শিল্প মানচিত্রে এক নম্বরে নিয়ে যেতে চান তিনি।