রাজ্যের নাম ব্যবহার করে যে সমস্ত সংগঠন অবৈধ কার্যকলাপ, চাঁদাবাজি ও অশান্তি সৃষ্টি করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। শনিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানান, এই ধরনের সংগঠনগুলি রেহাই পাবে না এবং আইন নিজের পথে চলবে।
সরাসরি নিশানায় ‘বীরলাচিত সেনা’
মুখ্যমন্ত্রীর কড়া আক্রমণের মূল লক্ষ্য ছিল ‘বীরলাচিত সেনা’ নামে একটি সংগঠন। তাঁর অভিযোগ, “কিছু সন্দেহজনক ব্যক্তি এবং সংগঠন নিজেদের নামের সঙ্গে ‘অসম’ ট্যাগ ব্যবহার করে সমাজসেবার নামে চাঁদাবাজি ও ভয় দেখানোর কাজ করছে।”
হিমন্ত বলেন, “এই সংগঠনটি সাদিয়া থেকে ধুবড়ি পর্যন্ত চাঁদা দাবি করছে। এটি সরাসরি চাঁদাবাজি এবং সমাজে অশান্তি সৃষ্টির সমান।”
তিনি বলেন, এই সংগঠনটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আড়ালে হুমকি, চাঁদা তোলা এবং পরিবেশের ক্ষতি করছে।
ULFA-এর সঙ্গে তুলনা ও নিষেধাজ্ঞার হুমকি
এই সংগঠনের কার্যকলাপের তীব্রতা বোঝাতে মুখ্যমন্ত্রী চরম পদক্ষেপ নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, “যদি প্রয়োজন হয়, আমরা এই সংগঠনের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথাও বিবেচনা করব। যেমনটা একসময় ULFA(I)-এর ক্ষেত্রেও করতে হয়েছে।” এই মন্তব্য রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে বড় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
‘দান সংস্কৃতি’তে লাগাম টানার নির্দেশ
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, সাম্প্রতিক কালে অসমে “দান সংস্কৃতি” বা ‘ডোনেশন কালচার’ বিপজ্জনকভাবে বাড়ছে। এই প্রবণতা রাজ্য সরকার একেবারেই বরদাস্ত করবে না।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলিকে ইতিমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যে কেউ ‘সংগঠনের নামে চাঁদা তোলে বা ভয় দেখায়’, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হিমন্ত বিশ্ব শর্মা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, “অসমে শান্তি, শৃঙ্খলা ও সুশাসন বজায় রাখা আমার সরকারের প্রথম দায়িত্ব। কেউ যদি রাজ্যের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করে, তাকে ছাড়া হবে না।”
যদিও মুখ্যমন্ত্রী কোনো ব্যক্তির নাম সরাসরি উল্লেখ করেননি, তবে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত কিছু ব্যক্তি ইতিমধ্যেই পুলিশের কড়া নজরদারিতে আছেন।