আরও একটি ১৫ আগস্ট সমাগত। দেখতে দেখতে স্বাধীনতার ৭৯তম বছরে পদার্পণ করল ভারত। ১৯৪৭ সালের এই দিনে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিল। সেই থেকে প্রতি বছর ১৫ আগস্ট ভারতে স্বাধীনতা, ঐক্য এবং গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। শুধু দিল্লিতেই নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই দিনটি ভিন্ন ভিন্ন রূপে এবং বিশেষ আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়।
আসুন জেনে নিই ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের কিছু বিশেষ চিত্র:
দিল্লি: দেশের রাজধানী দিল্লিতে স্বাধীনতা দিবসের মূল আকর্ষণ হলো লাল কেল্লায় অনুষ্ঠিত জাতীয় অনুষ্ঠান। এই দিন সকালে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। এরপর হয় সামরিক কুচকাওয়াজ, যেখানে দেশের বিভিন্ন সামরিক বাহিনী অংশ নেয়। বিভিন্ন রাজ্যের ট্যাবলো এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের বৈচিত্র্য ও ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়। এই অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের বহু বিশিষ্ট অতিথি উপস্থিত থাকেন।
পশ্চিমবঙ্গ: পশ্চিমবঙ্গে ১৫ আগস্ট দিনটি অত্যন্ত সুন্দর ও আড়ম্বরপূর্ণভাবে পালিত হয়। কলকাতার রেড রোডে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, যেখানে কলকাতা পুলিশসহ রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালসহ সরকারি ভবনগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এই দিনটি উপলক্ষে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং দেশাত্মবোধক গান পরিবেশিত হয়।
গুজরাত: মহাত্মা গান্ধীর জন্মস্থান হওয়ায় গুজরাতে এই দিনটির এক বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। এখানে গান্ধীজির ছবিতে মালা দেওয়া হয় এবং তার অবদানের কথা স্মরণ করা হয়। স্কুল-কলেজগুলোতে পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি গুজরাতের ঐতিহ্যবাহী গরবা নাচ এবং দেশাত্মবোধক নাটক অনুষ্ঠিত হয়। কুচকাওয়াজের আয়োজনও এই দিনের একটি বিশেষ অংশ।
মহারাষ্ট্র: মহারাষ্ট্রে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রাস্তায় রাস্তায় শোভাযাত্রা বের হয়। দেশাত্মবোধক গান এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শহরের প্রতিটি কোণ মুখরিত হয়ে ওঠে। মুম্বাইয়ের গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়াসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে জাঁকজমকপূর্ণ পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠান দেখা যায়, যা হাজার হাজার মানুষের ভিড় আকর্ষণ করে।
কর্নাটক: এই রাজ্যে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে স্কুল, সরকারি ভবন এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পতাকা উত্তোলন করা হয়। দেশাত্মবোধক গান এবং জাতীয় সঙ্গীতের পাশাপাশি পরিবেশগত সচেতনতা বাড়ানোর জন্য বৃক্ষরোপণ এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানের মতো কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।
তামিলনাড়ু: চেন্নাইয়ের মেরিনা সি-বিচে এই দিন জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সরকারি ভবনগুলোতে তামিলনাড়ুর সংস্কৃতিকে মাথায় রেখে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। দেশাত্মবোধক থিমের ওপর ভিত্তি করে ভারতনাট্যম এবং কর্নাটক সঙ্গীত পরিবেশিত হয়।
পঞ্জাব: পঞ্জাবে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের এক বিশেষ ধরন রয়েছে। এই দিনে ঘুড়ি ওড়ানো প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। আকাশে উড়ে বেড়ানো তেরঙা রঙের ঘুড়ি স্বাধীনতার চেতনার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়।
এভাবে দেশের প্রতিটি রাজ্য তাদের নিজস্ব ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির সঙ্গে মিলিয়ে স্বাধীনতা দিবসকে বিশেষ করে তোলে, যা ভারতের বৈচিত্র্যপূর্ণ ঐক্যকে আরও সুদৃঢ় করে।