এই বছর শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উৎসব উদযাপিত হবে আগামী ১৬ই আগস্ট, শুক্রবার। হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, ভাদ্রপদ মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে রোহিণী নক্ষত্রের সংযোগে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল। তাই এই শুভ তিথিতে মধ্যরাতের বিশেষ মুহূর্তে শ্রীকৃষ্ণের আরাধনা করাকে অত্যন্ত পবিত্র ও ফলপ্রসূ বলে মনে করা হয়।
জ্যোতিষ বিশেষজ্ঞদের মতে, ১৬ই আগস্ট জন্মাষ্টমীর দিন মধ্যরাতের পুজো শুরু হবে রাত ১২টা ৪০ মিনিটে এবং চলবে ১২টা ৪৭ মিনিট পর্যন্ত। এই ৪৩ মিনিটের মধ্যেই লাড্ডু গোপালের জন্ম থেকে শুরু করে সমস্ত পূজা-বিধি সম্পন্ন করার জন্য শুভ সময় পাওয়া যাবে। এই সীমিত সময়ের মধ্যেই ভক্তদের পূজা সেরে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যারা উপোস করেন, তারা ১৭ই আগস্ট ভোর ৫টা ৫১ মিনিটে ব্রত পালন করতে পারবেন।
পূজার নিয়ম ও পদ্ধতি:
জন্মাষ্টমীর দিনে শ্রীকৃষ্ণের শিশু অবতার, অর্থাৎ লাড্ডু গোপালের পূজা করা হয়। ভক্তরা এই দিন উপবাস করে নিজেদের পবিত্র রাখেন। সকালে ঘর এবং পূজার স্থান পরিষ্কার করে ফুল, আলো এবং তুলসী পাতা দিয়ে সাজানো হয়। এর পর একটি সুন্দর দোলনায় শিশু কৃষ্ণের বিগ্রহ বা ছবি স্থাপন করা হয়।
সারাদিন উপবাসের পর মধ্যরাতে পূজা শুরু হয়। পূজার সময় শ্রীকৃষ্ণের পছন্দের জিনিস যেমন মাখন, মিছরি, দুধ ও তুলসী পাতা দিয়ে তৈরি নৈবেদ্য নিবেদন করা হয়। এই দিনে ভজন, কীর্তন এবং মন্ত্র জপের বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে।
জন্মাষ্টমী উদযাপনের বিশেষ কিছু দিক:
- সাজসজ্জা: বাড়ির পূজার স্থান ফুল, আলো এবং অন্যান্য সজ্জা দিয়ে সুন্দর করে সাজান।
- বিগ্রহ স্থাপন: একটি সুন্দর সাজানো দোলনায় শিশু কৃষ্ণের মূর্তি বা ছবি রাখুন।
- নৈবেদ্য: কৃষ্ণের প্রিয় খাবার যেমন মাখন, মিছরি, বিভিন্ন ধরনের ফল এবং দুধ নিবেদন করুন।
- ভজন: ভক্তিপূর্ণ পরিবেশে কৃষ্ণ নাম জপ করুন এবং ভজন গান।
- আরতি: মধ্যরাতে শ্রীকৃষ্ণকে দোল দিয়ে আরতি করুন এবং জন্মোৎসবের আনন্দ ভাগ করে নিন।
এই দিনে অনেকে উপবাস রাখেন এবং মধ্যরাতে পূজার পর প্রসাদ খেয়ে নিজেদের ব্রত ভঙ্গ করেন। এই উৎসব কেবল একটি পূজা নয়, এটি ভক্ত ও ভগবানের মধ্যে এক গভীর ভালোবাসার বন্ধন।