বিরাট বদল বিদ্যুৎ পরিষেবায়! এবার বেসরকারি সংস্থা সরাসরি আপনার বাড়িতে দেবে কারেন্ট, মোদী সরকারের নতুন আইনে কী লাভ-ক্ষতি?

দেশের বিদ্যুৎ (Electricity) পরিষেবা ক্ষেত্রে এক বড়সড় পরিবর্তন আনতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এবার থেকে বেসরকারি সংস্থাগুলিও সরাসরি দেশের সব এলাকার গ্রাহকদের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করতে পারবে। এই লক্ষ্যে নতুন আইন আনতে চলেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। সরকারের দাবি, এই প্রতিযোগিতামূলক বাজারে গ্রাহকরা যেমন সস্তায় ভালো পরিষেবা পাবেন, তেমনই লোকসানে চলা সরকারি বিদ্যুৎ সংস্থাগুলির ওপর থেকে ঋণের বোঝা কমবে।

কেন এই পরিবর্তন?

বর্তমানে দেশের বেশিরভাগ স্থানেই বিদ্যুৎ সরবরাহ করে সরকারি সংস্থাগুলি, যা দীর্ঘদিন ধরে লোকসানের বোঝা টানছে। বহু জায়গায় বিদ্যুতের বিল ঠিকমতো আদায় না হওয়ায় এই সংস্থাগুলির ঋণ ক্রমশ বাড়ছে। এই সমস্যা সমাধানেই কেন্দ্র এখন বেসরকারি সংস্থাকে (Private Companies) সমস্ত এলাকায় প্রবেশের সুযোগ দিতে চাইছে। বর্তমানে কলকাতা, দিল্লি, ওড়িশা বা গুজরাটের মতো হাতে গোনা কয়েকটি রাজ্যেই বেসরকারি সংস্থার দাপট রয়েছে।

নতুন আইনে কী বলছে কেন্দ্র?

সূত্রের খবর অনুযায়ী, বিদ্যুৎ মন্ত্রকের এই নতুন খসড়া বিলে বলা হয়েছে, দেশের প্রতিটি অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিক্রির জন্য একাধিক বেসরকারি সংস্থা টেন্ডার (Tender) জমা দিতে পারবে। একই এলাকায় একাধিক সংস্থার বিদ্যুৎ দেওয়ার সুযোগ তৈরি হওয়ায় প্রতিযোগিতার জন্ম হবে। এর ফলে, সংস্থাগুলি গ্রাহকদের ভালো পরিষেবা দিতে এবং তুলনামূলক কম দামে বিদ্যুৎ দিতে বাধ্য হবে বলে মনে করছে সরকার।

বিরোধিতা ও আশঙ্কা:

কেন্দ্রের এই পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করেছে বিরোধীরা। তাদের মতে, এই আইনে সাধারণ মানুষের বিদ্যুৎ বিল উল্টে আরও বাড়বে এবং আদানি, টাটা বা সিইএসসি-এর মতো বড় কর্পোরেট সংস্থাগুলিই লাভবান হবে।

এছাড়াও, নতুন বিলে ভর্তুকির পদ্ধতিতেও বদল আনা হয়েছে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, সরকার যদি কোনও গ্রাহককে আর্থিক সাহায্য করতে চায়, তবে ভর্তুকির টাকা সরাসরি সেই গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে (DBT) পাঠানো হবে। এতে সঠিক গ্রাহকই সুবিধা পাবেন বলে মনে করছে কেন্দ্র।

কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক:

বেসরকারিকরণের আশঙ্কায় সরকারি বিদ্যুৎ কর্মীদের মধ্যে চরম উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। তারা মনে করছেন, এতে তাঁদের চাকরির নিরাপত্তা কমবে। এর আগেও ২০২২ সালে কেন্দ্রীয় সরকার একই ধরনের বিল আনার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু কর্মীদের প্রবল প্রতিবাদে তা আটকে গিয়েছিল। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, এবারও এই বিল নিয়ে তীব্র বিরোধিতা ও আন্দোলন হতে পারে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy