বলিউড অভিনেত্রী বিদ্যা বালান এবং সিদ্ধার্থ রয় কাপুর (Siddharth Roy Kapur) সুখে সংসার করছেন, কিন্তু আপনি কি জানেন, একসময় এই অভিনেত্রী একেবারেই বিয়ে করতে চাননি? কী বদলেছিল তাঁর মন?
পডকাস্টার রাজ শামানির শো ‘দ্য ফিগারিং আউট কো’-তে ‘ডার্টি পিকচার’ খ্যাত অভিনেত্রী বিদ্যা বালান অবশেষে তাঁর ‘সেটেল ডাউন’ হওয়ার পেছনের গল্পটি খুলে বলেন।
বিদ্যা বালান জানান, “জানেন, আমি কখনও বিয়ে করতে চাইনি। সিদ্ধার্থ সেই ধারণাটা বদলে দেয়। আমার মনে হতো বিয়ে করলে একটি মেয়ে সব কাজ করা থেকে বিরত থাকে। তার আর কোনো স্বাধীনতা থাকে না। কারণ পরিস্থিতি তো এমনই ছিল, তাই না? শুধু আমার মায়ের প্রজন্মেই নয়, তখনও চারপাশে তাকালে দেখা যেত যে মহিলারা তাদের পছন্দসই কাজ করতে পারছেন না। তাই আমি ভাবতাম, আমি বিয়ে করব না।”
তিনি প্রকাশ করেন যে তাঁর বন্ধুরা যখন বিয়ে বা হানিমুন নিয়ে আলোচনা করতেন, তখন তিনি কখনওই সেই ধরনের আলোচনায় অংশ নেননি। তিনি বলেন, “তারা কথা বলত, কিন্তু আমি শুধু শুনতাম। আমি কখনই এ সবে আগ্রহী ছিলাম না।”
বিদ্যা বালান যোগ করেন, “আমরা আমাদের বাবা-মায়ের বাইপ্রোডাক্ট। কিন্তু আমি মনে করি এরপর আমাদের জীবনে আসা মানুষরাই আমাদের গড়ে তোলে, বিশেষ করে আপনার জীবনসঙ্গী। এবং আমি মনে করি আমি আজ যা কিছু, আমি যেভাবে জীবনকে দেখি, তার অনেকটাই নির্ভর করে আমি কার সঙ্গে আছি তার ওপর।”
জীবনসঙ্গী নির্বাচন: কেন এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ?
বিদ্যা বালানের কথার মতোই, একজন জীবনসঙ্গী নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত যা গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত। কারণ এটি আপনার সুখ, কর্মজীবন, জীবনযাত্রার মান, পরিবার, আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং আপনার স্বাস্থ্যের মতো জীবনের বিভিন্ন দিককে প্রভাবিত করে।
মীরা রোড-এর ওয়াকহার্ট হসপিটালসের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ড. সোনাল আনন্দ-এর মতে, আপনার এই সিদ্ধান্তের আপনার পুরো জীবনে গুরুতর প্রভাব ফেলে। তিনি বলেন, “এটি নির্ধারণ করবে আপনি জীবনসঙ্গী হিসেবে কেমন মানুষ বেছে নেবেন, যিনি আপনার জীবনের উত্থান-পতনের সঙ্গী হবেন। এই কারণেই ভবিষ্যতের অনুশোচনা এড়াতে সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনার সঙ্গে একটি বুদ্ধিমান সিদ্ধান্ত নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” তিনি আরও যোগ করেন যে এই বিষয়ে তাড়াহুড়ো করা উচিত নয়, কারণ তাড়াহুড়ো করলে ভুল সঙ্গী নির্বাচন হতে পারে।
একজন জীবনসঙ্গীর মধ্যে কী কী গুণ থাকা উচিত?
ড. আনন্দ পরামর্শ দেন, “এমন কাউকে বেছে নিন যিনি আপনাকে আপনার মতো করেই গ্রহণ করেন এবং আপনার মানসিক চাপ কমাতে সমানভাবে চেষ্টা করেন। আপনার জীবনসঙ্গীর কাছে আপনার প্রত্যাশা কী, তা প্রথমে নির্ধারণ করা জরুরি। সব সময় নিজের ‘গাট ফিলিং’ বা স্বজ্ঞা অনুসরণ করুন। যদি আপনার কাউকে নিয়ে অনিশ্চিত বা সন্দেহজনক মনে হয়, তবে অবিলম্বে আপনার পরিবার বা প্রিয়জনদের সাথে আপনার উদ্বেগ ভাগ করে নিন।”
যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে, তিনি কিছু ব্যাকগ্রাউন্ড রিসার্চ করার পরামর্শ দেন:
তাঁদের আচরণগত ধরণ কেমন?
তাঁরা কি সহজে অতি উত্তেজিত, হতাশ বা হিংস্র হয়ে যান?
তাঁদের পরিবারের সদস্যরা কেমন? কারণ আপনি আপনার বেশিরভাগ সময় তাঁদের সাথেই কাটাবেন।
আপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোনো অপরাধমূলক রেকর্ডের কোনো চিহ্ন আছে কিনা, তা পরীক্ষা করে দেখুন।
ড. আনন্দ যোগ করেন, “বুদ্ধি করে এবং শান্তভাবে বেছে নিন, কারণ এই একটি সিদ্ধান্ত আপনার জীবন কোন দিকে চালিত হবে তা নির্ধারণ করতে পারে।”