বিজেপির ২৭ বিধায়ক ও ৪ সাংসদ তৃণমূলে আসার পথে!- কুণাল ঘোষের বিস্ফোরক দাবি

বছর ঘুরলেই ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন। আর তার আগে থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়েছে দলবদল নিয়ে জোর জল্পনা। এই জল্পনাকে আরও তীব্র করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর বিস্ফোরক দাবি, বিজেপির ২৭ জন বিধায়ক এবং ৪ জন সাংসদ নাকি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার জন্য প্রস্তুত, এবং তাঁরা নিয়মিত পদ্মশিবিরের ভেতরের খবরও তৃণমূলকে দিচ্ছেন। কুণালের এই দাবির পর থেকেই রাজনৈতিক মহলে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে।

পাল্টা দাবির রাজনীতি:

উল্লেখ্য, এর আগে রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছিলেন যে, শুধুমাত্র তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরাই নন, রাজ্যের আমলারাও নাকি তাঁর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। শুভেন্দুর দাবি ছিল, “১০০ জন ডব্লিউবিসিএস অফিসার এবং ১০ জন আইএএস অফিসার তাঁর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছেন, সমস্ত আপডেট দিচ্ছেন।” কুণাল ঘোষকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি পাল্টা দাবি করেন, “বিরোধী দলেরই ২৭ জন বিধায়ক এখনও সরাসরি তৃণমূলের যোগাযোগে আছেন। উনি আগে সেই ২৭ জনকে সামলান। কয়েকজন তো আগেই চলে এসেছেন। ওরাও তো ওখানকার খবর দিচ্ছেন। ৪ জন সাংসদও আছেন।” শুভেন্দুর দাবির সত্যতা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন।

সাম্প্রতিক দলবদলের চিত্র:

চলতি বছরের শুরুতেই হলদিয়ার বিজেপি বিধায়ক তাপসী মণ্ডল দলবল নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। মার্চ মাসে তাঁকে রাজ্যের নারী ও শিশু উন্নয়ন এবং সমাজকল্যাণ দফতর চেয়ারপার্সনের মতো একটি বড় পদও দেওয়া হয়। সেই প্রসঙ্গেও কুণাল ঘোষ দাবি করেছিলেন যে, “চারজন সাংসদ তৃণমূল কংগ্রেসে আসতে চলেছেন।”

শুধু তাই নয়, গত মে মাসেও বিজেপি শিবিরে আরও বড় ভাঙন ধরে। পদ্মশিবির ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ জন বার্লা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায়। তিনি সশরীরে কলকাতায় তৃণমূল ভবনে এসে ঘাসফুল শিবিরে যোগ দেন। তাঁর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি এবং মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। ওয়াকিবহাল মহল সূত্রে খবর, গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিট না পাওয়াতেই জন বার্লার দলের সঙ্গে মন কষাকষি শুরু হয়েছিল। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দিল্লি গিয়ে দলের উপরমহলের সঙ্গেও দেখা করেছিলেন। পরে সমস্ত জল্পনা সত্যি করেই তিনি তৃণমূলে যোগ দেন।

কুণাল ঘোষের এই নতুন দাবি যদি সত্যি হয়, তাহলে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির জন্য এটি একটি বড় ধাক্কা হবে। অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস এই দলবদলকে তাদের শক্তি বৃদ্ধির ইঙ্গিত হিসেবে তুলে ধরছে। রাজনীতিতে এই ধরনের দাবি ও পাল্টা দাবির খেলা নির্বাচনের আগে পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy