বুধবার নয়াদিল্লির ড. আম্বেদকর আন্তর্জাতিক কেন্দ্রে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী দেশের ঐক্য ও নিরাপত্তার ওপর আঘাত হানার এবং জনসংখ্যার ভারসাম্য বদলানোর ষড়যন্ত্র নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
মোদীর কণ্ঠে ‘জনতাত্ত্বিক পরিবর্তন’ নিয়ে উদ্বেগ
প্রধানমন্ত্রী মোদী স্পষ্ট বার্তা দিয়ে বলেন, দেশের ঐক্য ও অখণ্ডতাকে রক্ষা করাই এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। তিনি আজকের ভারতকে মুখোমুখি হওয়া নতুন দুটি চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন:
১. দেশের ঐক্য নষ্ট করার ষড়যন্ত্র: প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশের ভিতরে ও বাইরে উভয় দিক থেকেই আমাদের ঐক্য ও নিরাপত্তার উপর আঘাত হানার চেষ্টা চলছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে এবং সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।”
২. জনসংখ্যার গঠন বদলের চেষ্টা: মোদী আরও উল্লেখ করেন, “জনতাত্ত্বিক পরিবর্তন আজ এক বড় চ্যালেঞ্জ। সমাজ ও জাতির ভবিষ্যতের জন্য এটি বিপজ্জনক হতে পারে। তাই আমাদের অত্যন্ত সতর্ক হতে হবে। পরিবারকে ঐক্যবদ্ধ রাখা, সমাজকে একত্রে রাখা এবং দেশের ঐক্যকে অটুট রাখা এখন সময়ের দাবি।”
অতীতের সংগ্রাম থেকে আজকের লড়াই
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, আজকের যুগের সংগ্রাম অতীতের তুলনায় সম্পূর্ণ আলাদা। তিনি বলেন, “অর্থনৈতিক নির্ভরতা, ঐক্য নষ্ট করার চক্রান্ত, জনসংখ্যা বদলের ষড়যন্ত্র — এই সমস্ত চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় সরকার কার্যকরভাবে পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং আমি এতে সন্তুষ্ট।” তিনি এও জানান, কেন্দ্র সরকার এই সমস্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
আরএসএস-এর শতবর্ষ ও বিজয়াদশমীর বার্তা
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আরএসএস-এর শতবর্ষ উপলক্ষে বিশেষ স্মারক ডাকটিকিট ও মুদ্রা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “আগামীকাল বিজয়াদশমী। শুভ শক্তির অশুভ শক্তির উপর জয়, সত্যের অসত্যের উপর জয়, আলোর অন্ধকারের উপর জয়ের প্রতীক এই উৎসব। এই দিনেই ১০০ বছর আগে আরএসএস প্রতিষ্ঠা কোনও কাকতালীয় নয়। এটি ভারতের আত্মিক শক্তির জাগরণের প্রতীক।”
তিনি আরও বলেন, আরএসএস প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিল সমাজকে ঐক্যবদ্ধ রাখা এবং দেশকে সাংস্কৃতিকভাবে শক্তিশালী করা। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় সমাজে পরিবার ব্যবস্থার গুরুত্বের উপরও জোর দেন, যা বিভাজনের রাজনীতিকে রুখতে সাহায্য করে।