বালির দেশ সৌদি আরবও আমদানি করে বালি! রহস্যময় সংকট উন্মোচন

এমনটা কি কখনো সম্ভব যে একটি দেশ, যার প্রায় ৯৫ শতাংশই বালির মরুভূমি, তাকেও বাইরের দেশ থেকে বালি আমদানি করতে হয়? শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও, মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ দেশ সৌদি আরবের ক্ষেত্রে এটিই বাস্তব। নির্মাণ কাজের জন্য তাদের অস্ট্রেলিয়া, চিন এবং বেলজিয়ামের মতো দেশগুলি থেকে বালি আমদানি করতে হয়। কিন্তু নিজেদের সুবিশাল মরুভূমি থাকা সত্ত্বেও কেন এই পরিস্থিতি?

এই আপাতবিরোধীতার কারণ লুকিয়ে আছে বালির গঠনের মধ্যেই। আসলে, মরুভূমির বালি বহু বছর ধরে তীব্র বাতাসের ক্ষয়ের ফলে গোলাকার ও মসৃণ আকৃতি ধারণ করে। এই ধরনের বালি দিয়ে কংক্রিট তৈরি করা অত্যন্ত কঠিন, কারণ এর কণাগুলো একে অপরের সঙ্গে ভালোভাবে আবদ্ধ হতে পারে না, যার ফলে কংক্রিট দুর্বল হয়ে যায়।

বৃহৎ নির্মাণ কাজের জন্য প্রয়োজন হয় রুক্ষ ও কৌণিক বালির দানা, যা সিমেন্টের সাথে সহজে মিশে দৃঢ় বন্ধন তৈরি করতে পারে। এই ধরনের বালি সাধারণত মরুভূমিতে পাওয়া যায় না। এটি মূলত নদীগর্ভে, হ্রদে বা সমুদ্রের তলদেশে পাওয়া যায়। এই কণাগুলোই কংক্রিটকে আরও শক্তিশালী ও টেকসই করে তোলে।

সৌদি আরবের এই পরিস্থিতি নির্মাণ শিল্পে বিশ্বব্যাপী একটি বিরাট সমস্যার দিকে ইঙ্গিত করে – আর তা হলো প্রয়োজনীয় বালির ঘাটতি। যদিও পৃথিবী জুড়ে বালির অভাব নেই, তবে সব বালি নির্মাণ কাজের জন্য উপযুক্ত নয়। তথ্য বলছে, বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৫০ বিলিয়ন টন বালি ব্যবহৃত হয়, যা পৃথিবীর অন্যতম মূল্যবান এবং চাহিদাসম্পন্ন প্রাকৃতিক সম্পদ। সৌদি আরবের এই বাস্তবতা প্রমাণ করে যে, বালির পরিমাণ নয়, বরং তার গুণগত মানই নির্মাণ শিল্পের জন্য আসল চ্যালেঞ্জ।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy