মারাঠাভূমের রাজনীতিতে বালাসাহেব ঠাকরের প্রভাব আজও অবিস্মরণীয়। কিন্তু তাঁর নাম ব্যবহার করে এবার একনাথ শিন্ডে শিবিরের এক বিধায়কের কাণ্ড রীতিমতো বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। মুম্বইয়ের চার্চগেটের আকাশবাণী এমএলএ ক্যান্টিনে নিম্নমানের খাবার পরিবেশনের অভিযোগে ক্যান্টিনের এক কর্মীকে বেধড়ক মারধর করেছেন শিবসেনা বিধায়ক সঞ্জয় গাইকড়। এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর শিন্ডে শিবির চরম অস্বস্তিতে পড়েছে।
বিধায়কের আস্ফালন: ‘বালসাহেবের শেখানো ভাষা ব্যবহার করেছি, আমি গান্ধীবাদী নই’
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, বিধায়ক সঞ্জয় গাইকড় ক্যান্টিনের কর্মীকে চড়-থাপ্পড় মারছেন। ঘটনার পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিধায়ক বিন্দুমাত্র অনুশোচনা প্রকাশ করেননি। বরং তিনি সাফ জানিয়েছেন, যে ভাষায় কথা বলেছেন এবং যে আচরণ করেছেন, তা তিনি বালাসাহেব ঠাকরের থেকেই শিখেছেন।
তাঁর অভিযোগ, যে থালি তিনি অর্ডার করেছিলেন, তার ডাল এতটাই বিস্বাদ ছিল যে তা মুখে দেওয়াও যাচ্ছিল না। সঞ্জয় গাইকড়ের দাবি, এটি প্রথম ঘটনা নয়, বারবার এই ধরনের নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। মাংস থেকে ডিম, ডাল— সবকিছুই খারাপ মানের। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, বিধায়ককে যদি এমন খাবার পরিবেশন করা হয়, তাহলে সাধারণ মানুষকে কী মানের খাবার দেওয়া হয়?
দম্ভভরে তিনি আরও বলেন, “আমি বালাসাহেব ঠাকরের শেখানো ভাষা ব্যবহার করেছি। আমি জুডো, জিমন্যাস্টিকস, ক্যারাটে এবং কুস্তিতে একজন চ্যাম্পিয়ন। আমি গান্ধীবাদী নই। আমার কোনও অনুশোচনা নেই।”
রাজনৈতিক চাপান-উতোর ও শিবসেনার অস্বস্তি
সঞ্জয় গাইকড়ের এই মন্তব্যের পর মহারাষ্ট্রে তীব্র রাজনৈতিক চাপান-উতোর শুরু হয়েছে। বিরোধী দলগুলো এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বিধায়কের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে। অন্যদিকে, এই ভিডিও এবং বিধায়কের বেপরোয়া মন্তব্য শিবসেনা (একনাথ শিন্ডে শিবির)-কে চরম অস্বস্তিতে ফেলেছে। তাঁদের দলের এক বিধায়ক প্রকাশ্যেই এমন আচরণ করে বালাসাহেবের নাম ব্যবহার করায় দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বালাসাহেব ঠাকরের রাজনৈতিক উত্তরাধিকার নিয়ে যখন ছেলে উদ্ধব ঠাকরে এবং ভাইপো রাজ ঠাকরের মধ্যে নতুন করে জোট বাঁধার জল্পনা চলছে, ঠিক তখনই তাঁর নাম ব্যবহার করে এই ধরনের ঘটনা মারাঠাভূমের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করল। এই ঘটনা শিন্ডে শিবির কীভাবে সামাল দেয়, এবং বিধায়ক সঞ্জয় গাইকড়ের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।