এক মর্মান্তিক ঘটনায় শুক্রবার ভোরে অন্ধ্রপ্রদেশের কুর্নুল জেলায় একটি বেসরকারি বাসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এক বাইক আরোহীর বেপরোয়া আচরণই এই ভয়াবহ ট্র্যাজেডির মূল কারণ।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে যে, দুর্ঘটনার আগে শিব শঙ্কর নামে এক বাইক আরোহী মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ২৪ অক্টোবর রাত ২টা ২৩ মিনিট নাগাদ শঙ্কর তার মোটরসাইকেল একটি পেট্রোল পাম্পে পার্ক করেন এবং কিছুক্ষণ পর অস্থিরভাবে গাড়ি ঘুরিয়ে দ্রুত গতিতে চলে যান।
কীভাবে ঘটল দুর্ঘটনা?
কুর্নুল জেলার চিন্নাতেকুরু গ্রামের কাছে বেঙ্গালুরুগামী ‘ভি কাবেরী ট্রাভেলস’-এর বাসটির সঙ্গে শিব শঙ্করের মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ ঘটে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, বাইকের জ্বালানির ঢাকনা খোলা ছিল। সংঘর্ষের পর বাইকটি বাসের নীচে ঢুকে গেলে মুহূর্তের মধ্যে আগুন ধরে যায়। আগুন বাসের সামনের দিক থেকে শুরু হয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যেই গোটা গাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে।
এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় বাসের ১৯ জন যাত্রী এবং বাইক আরোহী শিব শঙ্কর দগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
চালকের বিরুদ্ধে মামলা, শুরু উচ্চপর্যায়ের তদন্ত
বাসটিতে মোট ৪৪ জন যাত্রী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে অনেকে জানালা ভেঙে পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন। বাসের চালক মিরিয়ালা লক্ষ্মাইয়া (৪২) যাত্রীবাহী দরজা দিয়ে লাফিয়ে পড়ে নিজের প্রাণ বাঁচান। পরে অবশ্য তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ধারা ১২৫(ক) (মানুষের জীবনকে বিপন্ন করা) এবং ধারা ১০৬(১) (অবহেলার কারণে মৃত্যু ঘটানো)-এর অধীনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বাসটি দমন ও দিউতে নিবন্ধিত ছিল এবং সর্বভারতীয় পারমিটে চলাচল করছিল। পুলিশ ট্রাভেল কোম্পানির নথি এবং বাসের অগ্নিনির্বাপণ সংক্রান্ত কাগজপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে।
অন্ধ্রপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বঙ্গালপুদি অনিথা এই ঘটনার উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জানান, পরিবহন, সড়ক ও রাজস্ব দপ্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই তদন্তের বিস্তারিত প্রতিবেদন মুখ্যমন্ত্রী এন. চন্দ্রবাবু নাইডু-র কাছে পেশ করা হবে।