বাংলা ভাষা নিয়ে চলমান রাজনৈতিক তরজা এক নতুন মোড় নিয়েছে। বিজেপি নেতা অমিত মালব্যের ‘বাংলাদেশি ভাষা’ সংক্রান্ত মন্তব্যের প্রতিবাদে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার হুগলির কামারপুকুরে রামকৃষ্ণ মঠ থেকে এক কড়া বার্তা দিয়েছেন। এটি কেবল একটি রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া নয়, বরং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কেন্দ্র থেকে দেওয়া এক গভীর বার্তা।
মমতা তার বক্তব্যে সরাসরি বাংলার সাংস্কৃতিক পরিচয়কে তুলে ধরেন। জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং ‘বন্দে মাতরম’-এর লেখক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে, বাংলা ভাষা ভারতের মূল সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাঁর এই মন্তব্য বিজেপির ‘বাংলাদেশি’ মন্তব্যের বিপরীতে বাংলার ভারতীয় পরিচয়কে প্রতিষ্ঠিত করার একটি কৌশল।
অমিত মালব্যের অভিযোগ ছিল যে, মমতা ভাষাভিত্তিক সংঘাত উসকে দিচ্ছেন। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার বক্তৃতায় বিভেদের পরিবর্তে ঐক্যের বার্তা দেন। তিনি রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের ‘সবাইকে নিয়ে একত্রে থাকা’র বাণী উল্লেখ করে বলেন, ‘জলকে কেউ জল বলে, কেউ পানি, কেউ ওয়াটার বলে। তফাত আর কিছু নেই। রক্ত তো সকলের এক।’ এই মন্তব্যটি বিজেপির বিভেদমূলক রাজনীতির বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী পাল্টা জবাব।
এই বিতর্কটি কেবল ভাষা নিয়ে নয়, বরং বাঙালির আত্মপরিচয়, সম্মান এবং রাজনৈতিক ক্ষমতার লড়াই নিয়ে। আগামী দিনে এই ইস্যুটি আরও বড় আকার ধারণ করতে পারে, বিশেষত যখন দিল্লিতে বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের ‘বাংলাদেশি’ বলে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ইস্যুকে রাজনৈতিকভাবে তুলে ধরে বিজেপির বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করতে চাইছেন।