বাংলা ও বাঙালির ঐতিহ্য যখন রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু, তখন কামারপুকুরে গিয়ে আবারও বিজেপিকে নাম না করে নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার হুগলির আরামবাগে জয়রামবাটি কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মঠের নতুন অতিথি নিবাস ও পার্কিং-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে তিনি বাঙালির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস তুলে ধরেন।
বাংলা ও বাঙালির অবদান:
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “জাতীয় সংগীত লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বন্দে মাতরম রচনা করেছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। রামকৃষ্ণদেব, স্বামী বিবেকানন্দ, সারদা মা, বিদ্যাসাগর, রাজা রামমোহন রায়, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু – এমন অসংখ্য মানুষ দেশকে পথ দেখিয়েছেন এবং তাঁরা সবাই বাঙালি।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের ভাষা নিয়ে কেউ খেলার চেষ্টা করবেন না, অসম্মান করার চেষ্টা করবেন না।”
ধর্ম নিয়ে বিভাজনের বিরুদ্ধে বার্তা:
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ধর্মকে জানতে আমাদের অন্য কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন নেই। ঠাকুর রামকৃষ্ণ ও সারদা মায়ের সঙ্গেই তা জানা যায়। রামকৃষ্ণদেব সর্বধর্ম সমন্বয়ের শিক্ষা দিয়েছেন। তাই আমাদের মধ্যে কোনো ভাগাভাগি নেই।” তিনি বিজেপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন যে, ধর্ম নিয়ে বিভেদ সৃষ্টি করার চেষ্টা তিনি মেনে নেবেন না। স্বামী বিবেকানন্দের শিকাগো বক্তৃতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এঁরা সবাই কিন্তু বাংলা ভাষায় কথা বলতেন, মনে রাখবেন।”
জয়রামবাটি কামারপুকুর ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের ঘোষণা:
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী জয়রামবাটি কামারপুকুর ডেভেলপমেন্ট বোর্ড গঠনের কথা ঘোষণা করেন। তিনি জানান, বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে জয়রামবাটি কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মঠের লোকত্তরানন্দ মহারাজকে নিযুক্ত করা হয়েছে এবং এই প্রকল্পের জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই পদক্ষেপের ফলে এই দুটি ঐতিহাসিক স্থানের উন্নয়ন আরও দ্রুত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই ধরনের মন্তব্য এবং পদক্ষেপ রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনা সৃষ্টি করেছে।