দেশের অন্যতম বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থা আইটিসি লিমিটেড (ITC Limited) ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জ (CSE) থেকে তাদের শেয়ারের স্বেচ্ছামূলক ডিলিস্টিং অনুমোদন করল। গত ৩০ অক্টোবর এক্সচেঞ্জ ফাইলিংয়ে এই ঘোষণা করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে বাংলার আর্থিক ঐতিহ্যের প্রতীক ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জ (CSE) থেকে নিজেদের নাম তুলে নিল এই শহরেরই সবচেয়ে বড় কোম্পানিগুলির অন্যতম আইটিসি।
তবে বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করে জানানো হয়েছে, আইটিসির শেয়ারের লেনদেন ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ (NSE) ও বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে (BSE) স্বাভাবিকভাবেই চলবে।
বন্ধের পথে ১১৪ বছরের CSE:
আইটিসির এই পদক্ষেপ এমন এক সময়ে এলো, যখন ১১৪ বছরের পুরোনো এই স্টক এক্সচেঞ্জ নিজেই ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। পিটিআই রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ২০ অক্টোবর শেষ কালীপুজো ও দীপাবলি উদযাপন করেছে ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জ। ২০১৩ সালের এপ্রিল মাস থেকে রেগুলেটরি জটিলতার কারণে সেবি (SEBI) এই স্টক এক্সচেঞ্জের ট্রেডিং সাসপেন্ড করে রেখেছে। বহু বছর ধরে আইনি লড়াইয়ের পর, কলকাতা স্টক এক্সচেঞ্জ স্বেচ্ছামূলকভাবে স্টক এক্সচেঞ্জ লাইসেন্স থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
যদিও চলতি ত্রৈমাসিকে আইটিসি ভালো লাভ করেছে (নেট মুনাফা ৫ হাজার ১৮৬ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা), তবুও তারা লেনদেনের জন্য ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের উপর আর ভরসা রাখছে না। বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আইটিসির এই পদক্ষেপ ছিল সময়ের অপেক্ষা। কারণ:
দীর্ঘদিন ধরেই ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন বন্ধ রয়েছে।
বিনিয়োগকারীরা এখন মূলত NSE বা BSE ব্যবহার করেন।
ভবিষ্যৎ কী? সেবি যদি ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জকে এক্সিট করতে অনুমতি দেয়, তবে এই প্রতিষ্ঠানটি একটি হোল্ডিং কোম্পানি হিসেবে কাজ করবে। এর শাখা সংস্থা CSE Capital Markets Private Limited শুধুমাত্র NSE ও BSE-এর সদস্য হিসেবে ব্রোকিং ব্যবসা চালিয়ে যাবে। এই ডিলিস্টিং কার্যত কলকাতা ও বাংলার আর্থিক ইতিহাসে একটি স্বতন্ত্র স্টক এক্সচেঞ্জ হিসেবে CSE-এর দীর্ঘ ও গৌরবময় অধ্যায়ের ‘প্রতীকী’ সমাপ্তি ঘোষণা করল।