‘বাঁচাও বাঁচাও’ চিৎকারে জড়ো হলো জনতা! হাওড়ায় বন্ধুকে খুনের পর নিজেই থানায় আত্মসমর্পণ, ঠিক কী ঘটেছিল?

বন্ধুর স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার জেরে ৯ মাস ধরে পুষে রাখা আক্রোশ, অবশেষে চরম আকার ধারণ করল। মদের আসরে বন্ধুকে ডেকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে মধ্য হাওড়ার গণেশ মাঝি লেনের একটি বাড়িতে ঘটেছে এই রোমহর্ষক ঘটনা।

মৃত যুবকের নাম রবি প্রসাদ। আর এই খুনের অভিযোগে বিকাশ চৌধুরী ওরফে মনু নামে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে শিবপুর থানার পুলিশ।

মদের আসরে ডেকে চপার দিয়ে কোপ
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে অভিযুক্ত বিকাশ চৌধুরী তাঁর বন্ধু-বান্ধবদের ডেকে বাড়ির ছাদে মদের আসর বসিয়েছিলেন। সেখানেই বিশেষ করে ডাকা হয়েছিল রবি প্রসাদকে।

বচসা: মদের আসরে বিকাশের সঙ্গে রবির তীব্র বচসা শুরু হয়।

খুন: তখনই বিকাশ চৌধুরী একটি চপার দিয়ে রবিকে এলোপাথাড়ি কোপাতে শুরু করেন।

মৃত্যু: রবি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে তিনি সিঁড়িতে পড়ে যান। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।

বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শত্রুতা
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, এই খুনের প্রধান কারণ হলো ত্রিকোণ প্রেম এবং পুরনো শত্রুতা।

প্রায় ৯-১০ মাস আগে বিকাশের স্ত্রীকে নিয়ে রবি পালিয়ে গিয়েছিলেন। পরে বিকাশের স্ত্রী ফিরে এলেও বিকাশ সেই ঘটনার পর থেকেই রবির উপর তীব্র রাগ পুষে রেখেছিলেন।

খুনের দিন বিকাশের স্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না; তিনি বাপেরবাড়ি গিয়েছিলেন। এই সুযোগেই বিকাশ রবিকে বাড়িতে মদের আসরে ডাকেন।

স্থানীয়দের চাঞ্চল্য
বৃহস্পতিবার রাতে ওই বাড়িতে হঠাৎ ‘বাঁচাও বাঁচাও’ চিৎকার শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। স্থানীয় এক বাসিন্দা মামণি গায়েন বলেন, “রাতে হঠাৎ চিৎকার হয়। তারপর দেখি, তিন জন লোক দৌড়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাচ্ছে। এখানে প্রায় প্রতিদিন মদের আসর বসে।”

খবর পেয়ে শিবপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে এবং মৃতদেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বিবাহ বহির্র্ভূত সম্পর্ক থেকে তৈরি হওয়া শত্রুতার জেরেই এই খুন। হাওড়া থানা এলাকা থেকে ধারালো অস্ত্র-সহ অভিযুক্ত বিকাশকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ এবং এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy